ইসলামী ব্যাংকের পান থেকে চুন খুশলেই সমস্যা বলে জানান ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আরাস্তু খান। তবে অন্যান্য ব্যাংকের নানা সমস্যা থাকলেও কোনো কিছুই হয় না। ইসলামী ব্যাংক সততা এবং যোগ্য ম্যানেজমেন্টের শরীয়াহভিত্তিক পরিচালনার কারণে ইসলামী ব্যাংক এগিয়ে যাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে ফাইন্যান্সিয়াল প্রযুক্তি ব্যহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আজ সোমবার ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ম্যানেজমেন্টের ১ বছরের কর্মকাণ্ডে ব্যাংকের এখনকার অবস্থান তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। আরাস্তু খান বলেন, আমরা সব কিছুকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। গত ১ বছরে ইসলামী ব্যাংকের ডিপোজিট ও পরিচালন মুনাফায় বড় সাফল্য এসেছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ সমাপ্ত হিসাব বছরে ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬৭ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ব্যাংক আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৭ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
তিনি বলেন, এসময়ে ব্যাংক বিনিয়োগ ১৩ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ১০০ কোটি টাকা। তবে নিট বিনিয়োগ হয়েছে ৬৫ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। এখন ব্যাংকটির ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডি রেশিও ৮৭ দশমিক ৮০ শতাংশ। নন পার্ফমিং লোনের (এনপিএল) হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশে। যা গত বছরে ছিল ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এই বছরে আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। বিনিয়োগকৃত আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। আমদানিতে ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি, রপ্তানিতে ২৪ হাজার কোটি এবং ২৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছে।
আমাদের রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধির বড় কারণ হলো পলিসিতে পরিবর্তন আনা। ইসলামী ব্যাংক রেমিট্যান্স থেকে অর্থ আয় করতে চায় না। এই জন্য গ্রাহকদের একটি সহনীয় রেট দিতে পেরেছি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা শরীয়াহ সমর্থন করে না এমন কোনো প্রোডাক্টের অনুমতি দেই না। সততা এবং শরীয়াহকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে ইসলামী ব্যাংক আজ এই শক্ত অবস্থানে আসতে পেরেছে।
এসময় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল হামিদ মিয়া এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ইসলামী ব্যাংকে কখনও তারল্য সংকট থাকবে না। আমাদের ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডি রেশিও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। আমরা এখন বড় খাতের ঋণ কমিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতে ঋণের পরিমাণ বাড়াতে চাই। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ম্যানেজমেন্ট কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মতিন, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. জিল্লুর রহমান, পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব-উল-আলমসহ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।