রাশিয়ার সমর্থনে যখন আসাদ সরকার সিরিয়ার পুরো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে যাচ্ছে, তখন মার্কিন সমর্থনে সিরিয়াকে ভাঙার নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
সিরিয়ার পূর্ব উপকূলে মার্কিন সমর্থিত মিলিশিয়াদের নিয়ে একটি নতুন বাহিনী গঠনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পনা শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যে কোয়ালিশন সিরিয়ায় বিরোধীদের সাহায্য করছে, তারা রোববার ঘোষণা করেছে- তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্ত লাগোয়া অঞ্চলে তারা একটি সীমান্তরক্ষী বাহিনী তৈরি করবে।
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) নামে এই বাহিনীর সদস্য হবে ৩০ হাজার। এদের মধ্যে অধিকাংশই আসবে কুর্দি মিলিশিয়া বাহিনী ওয়াইপিজি থেকে। সঙ্গে থাকবে আরবরা। আর বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকবে প্রেসিডেন্ট আসাদবিরোধী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস বা এসডিএফের হাতে।
এদিকে মার্কিন সমর্থনে এ বাহিনী গঠনের কঠোর সমালোচনা করেছে সিরিয়ার সরকার, তার মিত্র রাশিয়া ও তুরস্ক।
সিরিয়া বলছে, এ ধরনের বাহিনী তৈরি করাটা হবে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের গুরুতর লঙ্ঘন।
আর রাশিয়া বলছে, এ বাহিনী সিরিয়ার বিভক্তি ডেকে আনতে পারে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, তার ভাষায়- ‘সন্ত্রাসী’ এ বাহিনীকে আঁতুড়ঘরেই ধ্বংস করে দেয়া হবে।
আমেরিকার নেতৃত্বে কোয়ালিশনের একজন মুখপাত্র রায়ান ডিলনকে উদ্ধৃত করে তুরস্কের দৈনিক হুরিয়াত জানিয়েছে, এ সীমান্তরক্ষী বাহিনী শুধু তুরস্কের সীমান্তেই নয়, সিরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বে ইরাকের সীমান্তেও মোতায়েন করা হবে।
প্রতিক্রিয়ায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরফ মস্কোতে বলেন, এ ধরনের বাহিনী তৈরি হলে সিরিয়া ভেঙে যাবে।
তিনি বলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে সিরিয়াকে ভাগ করার একটি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় উদ্বেগের যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।
সবচেয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তুরস্ক। কারণ কুর্দি মিলিশিয়া বাহিনী ওয়াইপিজি তুরস্কের দুই চোখের বিষ। আঙ্কারা এদেরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দেখে, যারা তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
প্রেসিডেন্ট এরদোগানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেন, আমেরিকার এ উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয় এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে যে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে মোকাবেলার অধিকার তুরস্কের রয়েছে।
আর সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের বাহিনী তৈরি করে আমেরিকা সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি আঘাত করেছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা