ওয়ালটনের নবনির্মিত কম্পিউটার কারখানা উদ্বোধন করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, একটি হাই-টেক পার্কে যা যা থাকা দরকার, তার সমস্ত কিছুই ওয়ালটনের রয়েছে। তারা আবেদন করলে হাই-টেক পার্কের সকল সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
তিনি বলেন, ওয়ালটন কারখানায় দুইস্তর বিশিষ্ট মাদারবোর্ড তৈরি হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যেই ওয়ালটন মাল্টিলেয়্যার মাদারবোর্ড তৈরিসহ কম্পিউটারের সমস্ত কিছুই যেমন র্যাম, এএসডি ডিভাইসেস ইত্যাদি নিজেরাই তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এটা খুবই আনন্দের সংবাদ।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বাংলাদেশে কম্পিউটার কারখানা স্থাপন করেছে ওয়ালটন। এটি একটি সাহসী উদ্যোগ। এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। সফটওয়্যার খাতের মতো হার্ডওয়্যার খাতেও সরকারি সহযোগিতা প্রদানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু সাহসী উদ্যোগ থাকলেই চলবে না, তার সাথে দরকার সরকারের সহযোগিতা। এ দুটি মিলেই আসবে সফলতা।
ওয়ালটনে বিভিন্ন প্রোডাকশন লাইন ঘুরে দেখলাম, এ ধরণের অত্যাধুনিক প্রোডাকশন ও অ্যাসেম্বিলিং লাইন আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। ওয়ালটন এরকম অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি, ২০১৮) গাজীপুরের চন্দ্রায় নবনির্মিত ওয়ালটন কম্পিউটার কারখানা উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৃহস্পতিবার ওয়ালটন ডিজি-টেক কারখানায় পৌঁছলে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানান ওয়ালটন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রেজভী। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম, ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল আলম।
উদ্বোধন শেষে কারখানার বিভিন্ন উৎপাদন ইউনিট ঘুরে দেখেন অতিথিরা। সূত্র জানায়, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজে কম্পিউটার উৎপাদন ইউনিটে স্থাপন করা হয়েছে বিশ্বের লেটেস্ট জাপানী ও জার্মান প্রযুক্তির মেশিনারিজ। গড়ে তোলা হয়েছে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার ডিজাইন ডেভেলপ, গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ, মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও টেস্টিং ল্যাব।
প্রাথমিকভাবে, এই কারখানায় মাসে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬০ হাজার ইউনিট ল্যাপটপ, ৩০ হাজার ইউনিট ডেস্কটপ এবং আরো ৩০ হাজার ইউনিট মনিটর। পর্যায়ক্রমে কম্পিউটারের অন্যান্য অ্যাক্সেসরিজসহ পেন ড্রাইভ, কিবোর্ড এবং মাউস উৎপাদনে যাবে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের এই কারখানায় তৈরি হতে যাচ্ছে ইন্টেলের সর্বশেষ প্রজন্মের প্রসেসরযুক্ত ল্যাপটপ। উৎপাদন হবে সাশ্রয়ী মূল্যের বিভিন্ন মডেলের ওয়ালটন ডেস্কটপ এবং মনিটর।
এরইমধ্যে এসএমটি (সার্ফেস মাউন্টিং টেকনোলজি) সিস্টেমের মাধ্যমে পিসিবি (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) এর উপর অতি নিঁখুতভাবে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম পিন বসিয়ে উচ্চ গুণগতমানের পিসিবিএ বা মাদারবোর্ড তৈরি শুরু হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুদ। ওয়ালটন কম্পিউটার কারখানায় কর্মসংস্থান হচ্ছে এক হাজার লোকের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানান, গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো কম্পিউটার তৈরির অত্যাধুনিক কারখানা। যার মধ্যে দিয়ে আতœপ্রকাশ করলো দেশের প্রথম কম্পিউটার উৎপাদন কারখানার। সেই সঙ্গে স্মার্টফোনের পর বাংলাদেশের নাম যুক্ত হলো কম্পিউটার উৎপাদনকারি দেশের তালিকায়। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন খাতে রচিত হলো নতুন ইতিহাস। উম্মোচিত হলো উচ্চ প্রযুক্তি পণ্যে নতুন দিগন্ত।