২০১৮ সালে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সেতুমন্ত্রী ওবাইদুল কাদের চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে না। আমার ধারণা, ২০১৯ সালের জুনের দিকে অবশ্যই পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে পারবো। তখন সেতু দিয়ে যান বাহন চলাচল শুরু হতে পারে।
গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৮’তে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট সম্মাননা সনদ ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন। এসময় এনবিআরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট বি জুয়েলি একজন ভয়ঙ্কর ধরনের বদমাইশ ও অত্যন্ত বাজে লোক। তার ষড়যন্ত্রের কারণেই পদ্মা সেতুর অর্থায়ন আটকে যায় যা পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে।
মুহিত বলেন, বিশ্ব ব্যাংককের ওই প্রেসিডেন্টের কারণেই আমরা চারজন মানুষ অপদস্থ হয়েছিলাম। মশিউর রহমানকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। আবুল হোসেনকেও সরিয়ে দেয়া হয়। আমি বার বার বলেছিলাম, এটা ষড়যন্ত্র। কিন্তু সেটা তখন আমলে নেয়া হয়নি। ওই সময় একমাত্র প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছিলেন। এজন্য তিনি বিশ্ব ব্যাংকের কাছে থেকে অর্থ নেয়া বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে বিশ্বব্যাংকে আরেকজন নতুন প্রেসিডেন্ট আসলেন। তিনি এসে বলেছিলেন এ ঋণ বরাদ্দ বাতিল হতে পারে। কারণ পদ্মা সেতু নিয়ে নতুন করে ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে হবে। এটা অনেক দিনের পুরনো হয়ে গেছে। এতে প্রায় বছর খানেক লাগবে। তখনই পদ্মা সেতু নিজ অর্থায়নে করার একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এটা নিয়ে এতো ঝামেলা হয়েছে যে আর কারও কাছে সহায়তা চাইলাম না। খুশির খবর হলো এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হচ্ছে।
মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওই সময় এখানে উপস্থিত আমরা চারজনই ভিকটিম ছিলাম। পরবর্তীতে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে কানাডার আদালতের সেই রায়ে বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, রবার্ট বি জুয়েলিক ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ই বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর ১২০ মিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ঋণ চুক্তি আটকে যায়।