খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ঢাকায় মিছিল-জমায়েতে নিষেধাজ্ঞাকে ‘আইনের নামে অনাচার’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার ওই রায় ঘোষণা সামনে রেখে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশ ‘বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে’ এই নিষেধাজ্ঞা জারির পর বিকালে সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, “৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সব ধরনের মিছিল সমাবেশ বন্ধের ডিএমপি যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তা আইনের নামে অনাচার। এটা ভয়ঙ্কর কালা-কানুন।”
তবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের ‘ভালোবাসা আটকানো যাবে না’ বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, “জনগণের হৃদয়ে যে ক্ষোভ-বেদনা দানা বেঁধেছে, সেই বেদনা আপনি (সরকার) আইনের দ্বারা, অস্ত্রের দ্বারা বন্ধ করতে পারবেন না। মানুষ তার প্রতিবাদ করতে ছুটবেই ছুটবে।”
এই বিশ্বাসের কারণ ব্যাখ্যা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এত অত্যাচার-গ্রেপ্তারের’ পরেও খালেদা জিয়ার কর্মসূচিতে মানুষ যাচ্ছে, দাঁড়াচ্ছে।
“এই যে মহাসমুদ্রের জনতার মধ্যে দেশনেত্রীর জনপ্রিয়তা, সেই জনপ্রিয়তায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও সেই পানি শুকাবে না, সেই পানি আরও বাড়তে থাকবে।”
দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের ওই মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে-এমন শঙ্কা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের নেত্রীকে ‘মুক্ত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“আমার নেত্রী, আমার মা বন্দী হতে দেব না-এটা এখন আওয়াজ সারা বাংলাদেশে,” বলেন রিজভী।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই রায় সামনে রেখে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে বিএনপির ১২০০ এর বেশি নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
ভোর থেকে দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, “আমরা এখনও কোথাও ট্রেস করতে পারিনি, আমরা এখন বুঝতে পারছি না। কারণ পুলিশ যখন বলেছে, আমাদের কাছে তখন তো অনিশ্চয়তা থাকার কথা নয়। আবার এরপরেই যদি বলে যে, আমরা (পুলিশ) জানি না তখন তো ভয়ের কারণ, উদ্বেগের কারণ।
“তাহলে সোহেল কোথায়? তাদের (পুলিশ) কাছে যদি থাকে তাহলে বাসায় গিয়ে হানা দিচ্ছে কেন? তার মেয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে কেন? তার স্ত্রী আতঙ্কিত হয়ে টেলিফোন করছে বিএনপি নেতাদের কাছে, আমার কাছে।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ নাসের্স ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।