ম্যাচের শেষ ওভারে পরপর দুটি বাউন্সার। অথচ নো বল দেননি আম্পায়ার! পরে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের কাছে জানা গেল, লেগ আম্পায়ার নো দিতে গিয়েও দেননি! ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ আম্পায়ারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও সমাধান পাননি। বাংলাদেশ দল এটিকে ‘পক্ষপাতমূলক’ আম্পায়ারিং হিসেবে ধরে নিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তো সতীর্থদের মাঠ থেকেই বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন ঘটনা খুব বেশি দেখা যায় না। কী এমন হয়েছিল যে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা উত্তেজিত হয়ে পড়লেন! টিম হোটেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সেই সময়ের একটা চিত্রনাট্য দাঁড় করিয়েছেন এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করা প্রথম আলোর প্রতিনিধি রানা আব্বাস...
মাহমুদউল্লাহ (লেগ আম্পায়ার রুচিরা পালিয়াগুরুগেকে): স্যার, এটা কেন নো বল নয়? পরপর দুটি বাউন্সার দিল! পরেরটার উচ্চতা আরও বেশি ছিল...।
(দুই আম্পায়ার কথা বলছেন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। গ্যাটোরেড হাতে ব্যাটসম্যানদের কাছে এলেন একাদশের বাইরে থাকা নুরুল হাসান। এ সময় থিসারা পেরেরা সিংহলিজ ভাষায় কিছু বললেন আম্পায়ারদের।)
থিসারা (মাহমুদউল্লাহকে): আম্পায়ারদের সঙ্গে এত কথা বলার কী আছে?
নুরুল: তোমার এত লাগছে কেন?
থিসারা: তুই এখানে ... (গালি) করতে এসেছিস কেন?
নুরুল (থিসারার দিকে আঙুল তুলে): আমি এসেছি তোমার কী? তুমি তোমার কাজ করো, আমার ব্যাপারে নাক গলানোর দরকার নেই।
(আম্পায়ারদের হস্তক্ষেপে নুরুল বেরিয়ে আসেন মাঠ থেকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছুটে যান রিজার্ভ আম্পায়ারের কাছে)
সাকিব: কেন এটা নো বল দেওয়া হলো না, স্যার? কেন নিয়ম ভাঙা হলো?
(আম্পায়ারের কাছে সদুত্তর না পেয়ে সাকিব দুই ব্যাটসম্যানকে ইঙ্গিত করলেন বেরিয়ে আসতে। মাহমুদউল্লাহ-রুবেল হোসেন প্রায় সীমানার কাছে চলেও এলেন।)
ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ: এখন আসিস না। এলে ডিসকোয়ালিফাইড হতে হবে। বড় শাস্তি হয়ে যাবে। যা হওয়ার হয়েছে, তোরা (দুই ব্যাটসম্যানকে) ফিরে যা, ম্যাচ শেষ করে আয়।
মাহমুদউল্লাহ-রুবেল ফিরে গেলেন। এরপর? টান টান উত্তেজনা, ক্লাইমেক্স, অ্যান্টিক্লাইমেক্স শেষে থ্রিলিং সিনেমাটার সমাপ্তি একটা দলীয় নৃত্য দিয়ে—নাচ, নাগিন নাচ!
পুনশ্চ: ম্যাচ শেষে জার্সি খুলে রুপালি পর্দার নায়কদের মতো মাঠে ঢুকলেন সাকিব! যোগ দিলেন দলের উদ্যাপনে। ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় সাব্বির রহমান কিছু একটা বললেন কুশল মেন্ডিসকে। কুশল তেড়েফুঁড়ে আসতে চাইলেন সাব্বিরের দিকে। পরিস্থিতি সামাল দিলেন তামিম-মাহমুদউল্লাহ। ঘটনার বিচার করতে বসলেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড। শুনানির দরকার হয়নি। সবকিছু বিচার করে বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে একটা কাগজ পাঠিয়ে দিলেন, সাকিব-নুরুলদের ১ ডিমেরিট পয়েন্ট ও ২৫ শতাংশ জরিমানা—এ শাস্তি মানতে তাঁদের আপত্তি আছে কি না! সাকিব-নুরুল বিনা বাক্য ব্যয়ে সই করে দিলেন ব্রডের কাগজে!