বেশি বয়সে বিয়ের কারণে বাড়ছে স্তন ক্যান্সার!
প্রকাশ: ২০১৫-১১-০১ ১২:২৩:২৯
ক্যান্সার হওয়ার ভয়ে নিজের দু’টো স্তনই অস্ত্রোপচার করিয়ে বাদ দিয়েছেন হলিউড সুপারস্টার অ্যাঞ্জেলিনা জোলি৷ গোটা বিশ্বকে সদর্পে জানিয়েও দিয়েছেন সেই কথা৷ এই সাহস ক’জন অল্পবয়সি নারী দেখাতে পারবেন?
এখনো মহিলা নিয়ে কুসংস্কারের চাষ হচ্ছে গ্রামেগঞ্জে, এমনকী শহরেও৷ অজ্ঞতার জন্যই স্তন মহিলা বাড়ছে৷ বাড়ছে মৃত্যু৷ আগে ধারণা ছিল, মেনোপজের পর এই রোগ থাবা বসায় নারীদের শরীরে৷ অর্থাৎ স্তন কনসার মানে বেশি বয়সের রোগ৷ কিন্তু এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে৷
অল্পবয়সিদের মধ্যে স্তন ক্যানসার বাড়ছে৷ স্তন ক্যান্সারের শিকার হওয়া ৩৫ শতাংশ নারীর বয়স পঁয়ত্রিশের নিচে! বদলে যাওয়া এই ‘ট্রেন্ড’ নিয়ে শুরু হয়েছে দুশ্চিন্তা৷ অঙ্কোলজিস্ট, সেলিব্রিটিরাও সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করছেন৷ শুধু অ্যাঞ্জোলিনা জোলি-ই নন, সিন্থিয়া নিক্সন, রবিন রবার্টস, ক্রিস্টিনা অ্যাপলিগেট. ক্যাথে বেটস, একঝাঁক সেলিব্রিটি স্তন ক্যান্সারের প্রতিরোধের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে উঠেছেন৷ যদিও, জোলির দেখনো পথে ‘ম্যাসটেকটমি’ করে স্তন বাদ দেওয়ার বিরোধী বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁদের মতে, স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে জিনগত গঠন ১০ শতাংশ দায়ি৷ শুধু আশঙ্কার বশে ‘ম্যাসটেকটমি’ ঠিক নয়৷ বিশ্বজুড়ে স্তন ক্যান্সারের সচেতনতায় অক্টোবরকেই বেছে নেয়া হয়৷
বিশিষ্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. আশিস মুখোপাধ্যায় জানালেন, প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ধরা পড়লে স্তন ক্যান্সার সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯২-৯৫ শতাংশ৷ তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ৫০-৬০ শতাংশ৷ মাত্র ছ’মাসের চিকিৎসাতেই শাপমুক্তি সম্ভব৷ তাছাড়া সব সময় স্তন বাদ দিতে হয়, একথাও ঠিক নয়৷
মার্কিন গবেষকরা জানিয়েছেন, ২৩-২৭ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে করে তিরিশের মধ্যে দু’টি সন্তানের মা হতে হবে এবং সন্তানদের অন্তত ছ’মাস স্তন্যপান করাতে হবে৷ তবেই স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কা ৬০ শতাংশ কমিয়ে ফেলা যাবে৷ কিন্তু, ক’জন মহিলা জানেন এই তথ্য? জানলেও মানছেন ক’জন? কেরিয়ারের পিছনে ছুটতে গিয়ে এখন তো পঁয়ত্রিশের আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতেই পারছেন না ‘ওয়ার্কিং লেডি’-রা৷ অনেকে আবার তিরিশের মধ্যে বিয়ে করলেও ‘ফ্যামিলি প্লানিং’ শুরু করছেন দেরিতে৷
বিশিষ্ট অঙ্কোলজিস্ট ডা, গৌতম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সন্তান ধারণের সঙ্গে মহিলাদের শরীরে প্রোল্যাকটিন, প্রোজেস্টেরন হরমোন নির্গত হয়৷ যা ক্যান্সারের আশঙ্কা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে৷ সন্তান ধারণের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক হরমোন নিঃসরণ হয় যা রাজরোগ প্রতিরোধে অনেকটাই সাহায্য করে৷ বিশেষ করে সন্তানকে স্তন্যপান করালে মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যায়৷ দেশে-বিদেশে একাধিক সমীক্ষায় এই সহজ সত্যটা প্রকাশ্যে এসেছে৷ তবু, টনক নড়েনি বর্তমান প্রজন্মের৷ তাড়াতাড়ি সন্তান ধারণের ব্যপারে এখনও ততটা সিরিয়াস নন মহিলারা৷ কেরিয়ারের পিছনে ছুটতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছে নিজেদের৷
সানবিডি/ঢাকা/এসএস