স্বাধীনতার মাসে বাংলাদেশের জন্য এলো সুখবর। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশের পথে উত্তরণ; সেইসঙ্গে ল্যাপটপ কম্পিউটার উৎপাদক থেকে রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হলো বাংলাদেশ। এরফলে বহির্বিশ্বে আরো উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। বিশ্ববাজারে প্রবেশ করলো ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ল্যাপটপ। শুরুতে রপ্তানি হ"েছ নাইজেরিয়ায়। পর্যায়ক্রমে যাবে নেপাল, ভুটান এবং পূর্ব তিমুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
নাইজেরিয়ায় ল্যাপটপ রপ্তানি কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নাইজেরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওয়ালটনের আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন হলো আজ বুধবার (২১ মার্চ, ২০১৮)। বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ইনঅগোরেশন সিরিমনি অব ওয়ালটন ল্যাপটপ এক্সপোর্টেশন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ওয়ালটনের পক্ষে রপ্তানি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম। নাইজেরিয়ার পক্ষে ছিলেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন বেজ নাইজেরিয়া লিমিটেডের পরিচালক ডেভিড নোনে। এসময় উপ¯ি'ত ছিলেন, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম।
ওয়ালটনকে অভিনন্দন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের নীতিসহায়তা কাজে লাগিয়ে ওয়ালটন এগিয়ে যা"েছ। অল্প সময়ের মধ্যে তারা প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন করে দেশ-বিদেশে সুনাম কুঁড়িয়েছে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে রপ্তানিকারক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কম্প্রেসার এবং ল্যাপটপের মতো মানসম্পন্ন নতুন প্রযুক্তির ব"হৎ পণ্য উৎপাদনের তারা সফল হয়েছে। আশা করি উত্তরোত্তর তাদের অগ্রযাত্রা বেগবান হবে।
ডাক, টেলিেেযাগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ওয়ালটন ল্যাপটপ রপ্তানির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। তিনি চেয়েছিলেন দেশেই ল্যাপটপ কম্পিউটারের মতো প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন হবে এবং মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা নিয়ে তা রপ্তানি হবে। ওয়ালটন আজ তা সফল করলো।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমস্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ওয়ালটন প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে যে সাফল্য দেখিয়েছে তা অন্যান্য দেশী-বিদেশী প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে ওয়ালটন আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, দেশে ল্যাপটপ কম্পিউটার খাতের পুরোটাই ছিল আমদানি নির্ভর। কিš' সরকারি দিক-নির্দেশনা ও সহায়ক নীতির ফলে আমদানি নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। এ বছরের ১৮ জানুয়ারি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ড্রাস্ট্রিজে চালু হয়েছে দেশের প্রথম কম্পিউটার উৎপাদন কারখানা। যেখানে উৎপাদিত হ"েছ উ"চমানসম্পন্ন ল্যাপটপ, ডেস্কটপ ও মনিটরসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য। এই কারখানার মাসিক উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ হাজার ইউনিট ল্যাপটপ, ৩০ হাজার ইউনিট ডেস্কটপ এবং আরো ৩০ হাজার ইউনিট মনিটর। এর অর্থ বর্তমানে দেশের ল্যাপটপের চাহিদার পুরোটাই পূরণে সক্ষম ওয়ালটন।
ওয়ালটন কর্ত"পক্ষ জানায়, ইন্টেল- মাইক্রোসফট এবং বিজয় বাংলার সম্বন্বয়ে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে ল্যাপটপ কম্পিউটার উৎপাদন করছে ওয়ালটন। যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে রপ্তানি আদেশ আসছে। প্রথম রপ্তানি আদেশ এসেছে দক্ষিণ আফি"কার অন্যতম অর্থনৈতিক সম"দ্ধশালী দেশ নাইজেরিয়া থেকে। শুরুতে ৫০০ ইউনিট ল্যাপটপ নাইজেরিয়া যা"েছ। প্রতিবেশি দেশ নেপাল থেকেও ল্যাপটপ রপ্তানির আদেশ পেয়েছে ওয়ালটন। ভুটান এবং পূর্ব তিমুরেও ওয়ালটন ল্যাপটপ রপ্তানির বিষয়টি চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে আছে। সব মিলিয়ে প্রযুক্তিপণ্যের জগতে ‘সময় এখন বাংলাদেশের’।