চলছে গরম। শুরু হয়েছে রোজা। সামনে ঈদ। সব অনুষঙ্গই ফ্রিজ বিক্রির অনুকূলে। এ অবস্থায় দেশের বাজারে ৫৫ টি নতুন মডেলের ফ্রিজ নিয়ে এসেছে ওয়ালটন। সারা দেশে বিক্রিও হচ্ছে ব্যাপক।
দেখা গেছে, রমজান এবং ঈদে বাজারে ফ্রিজের চাহিদা ও বিক্রি বেড়ে যায়। আর এই বাড়তি চাহিদাকে ঘিরে রোজায় ২ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নিয়েছে দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড ওয়ালটন। যা গত বছরের রমজান মাসের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। টার্গেট পূরণে ওয়ালটন বাজারে এনেছে নতুন ৫৫ মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট ও ডিপ ফ্রিজ।
ওয়ালটনের কর্মকর্তারা জানান, অনেক সময় রোজা এবং ঈদে ফ্রিজের চাহিদা ধারণার চেয়েও বেশি বেড়ে যায়। সেরকম অবস্থায় তাৎক্ষনিক চাহিদা পূরণে বাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার সরবরাহ করছে ওয়ালটন। কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ। সরবারহ নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কারখানা থেকে ২৪ ঘন্টা পণ্য পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এদিকে বিক্রয়োত্তর সেবাকে অন-লাইন কার্যক্রমের আওতায় আনতে দেশব্যাপী আবারো ডিজিটাল ক্যাম্পেইন শুরু করেছে ওয়ালটন। এ বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ক্রেতারা প্রতিদিন ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে তা রেজিস্ট্রেশন করলেই পেতে পারেন ওয়ালটনের ফ্রিজ, টিভি অথবা এসি সম্পূর্ণ ফ্রি কিম্বা আমেরিকা ও রাশিয়া ভ্রমনের সুযোগ। ওইসব সুবিধা না পেলেও মিলবে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত ক্যাশব্যাক।
বিপণন কর্মকর্তারা জানালেন, নতুন আসা ৫৫ মডেলের মধ্যে রয়েছে সবার্ধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ৪১ টি ফ্রস্ট ও ৮ টি নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর। ডিপ ফ্রিজে নতুন এসেছে ৬ টি মডেল। ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মডেল এসেছে মজবুত টেম্পারড গøাস ডোরের রেফ্রিজারেটর। চোখ ধাঁধানো ডিজাইন ও কালারে ১৬ টি নতুন মডেলের গøাস ডোর ফ্রস্ট ফ্রিজ বাজারে খুব ভালো চলছে। এগুলোর দাম ২৪ হাজার ৫’শ টাকা থেকে ৩৬ হাজার ৮’শ টাকা পর্যন্ত।
ছোট পরিবার কিম্বা ব্যাচেলরদের ব্যাবহার উপযোগী ৫০ লিটার ও ১০৭ লিটার ধারণক্ষমতার দুটি নতুন মডেলের ফ্রস্ট ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। দাম ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১০ হাজার ৯’শ ও ১৪ হাজার ২’শ টাকা। আরো এসেছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বিএসটিআই’র ‘ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং’ সনদ প্রাপ্ত ২৫৪ লিটারের ফ্রস্ট ফ্রিজ।
ওয়ালটনের ২১ ধরনের নন-ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে নতুন যুক্ত হয়েছে ৮ টি মডেল। এর মধ্যে আছে তিন-দরজা বিশিষ্ট ৪৫৫ লিটার ও ৪৫২ লিটারের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির দুটি নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর। আরো আছে সাইড বাই সাইড বা পাশাপাশি দুই দরজা’র ৫০১ লিটারের রেফ্রিজারেটর, ৩২৮ লিটারের ডিজিটাল ডিসপ্লে ও ফাইভ স্টার সনদ প্রাপ্ত ৩২৮ লিটারের দুটি নতুন মডেলের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর।
রেফ্রিজারেটরের পাশাপাশি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের রয়েছে ১৪ মডেলের ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজার। এগুলোর দাম পড়ছে ১৯ হাজার ৪’শ থেকে ৩১ হাজার ২৯০ টাকা পর্যন্ত। নতুন এসেছে ডিপ ফ্রিজের ৬ টি মডেল। সবমিলিয়ে আপকামিং এর তালিকায় রয়েছে ২৯ টি মডেলের ফ্রিজ।
ফ্রিজ গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী তাপস কুমার মজুমদার জানান, ওয়ালটন ফ্রিজের দরজায় ব্যবহার করা হয়েছে ৯-লেয়্যার ভিসিএম ডোর। এর ফলে সহজে মরিচা ও দাগ পড়ে না। ডোর হয় দীর্ঘস্থায়ী এবং উজ্জ্বল।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও সেলস বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক ইভা রিজওয়ানা বলেন, নিজস্ব কারখানায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। এসব ফ্রিজে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এইচএফসি গ্যাসমুক্ত আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারি সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে ওয়ালটনের প্রতিটি ফ্রিজের মান নিশ্চিত করেই বাজারে ছাড়া হচ্ছে। তাই, স্থানীয় বাজারে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে ওয়ালটন ফ্রিজ।
তাঁর দাবি, ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার, ন্যানো হেলথ কেয়ার ও এন্টি ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট প্রযুক্তির ব্যবহার, এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, কম্প্রেসারে দশ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি, সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের সহজ কিস্তি সুবিধা, বিএসটিআই’র ফাইভ স্টার এনার্জি রেটিং, স্থানীয় আবহাওয়া উপযোগী করে দেশেই তৈরি হয় বলে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে ওয়ালটনের ফ্রিজ।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও সেলস বিভাগের প্রধান এমদাদুল হক সরকার বলেন, রোজায় দুই লাখের মত ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ওয়ালটন। তাঁর প্রত্যাশা, বিক্রির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে টার্গেটের চেয়েও বেশি ফ্রিজ বিক্রি হবে।
সূত্রমতে, স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে উচ্চ গুণগতমান সম্পন্ন ওয়ালটন ফ্রিজ। সম্প্রতি, বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মত ফ্রিজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ রপ্তানিও শুরু করেছে ওয়ালটন।
আইএসও সনদ প্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় দ্রæত সর্বোত্তম সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন। সারাদেশে ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার চালু রয়েছে। বিক্রয়োত্তর সেবায় গ্রাহকদের হোম সার্ভিস দিচ্ছে ওয়ালটন। গ্রাহকরা যেকোন মোবাইল থেকে ১৬২৬৭ নম্বরে কল দিয়ে বছরের ৩৬৫ দিনই পাচ্ছেন কাঙ্খিত সেবা। তথ্য প্রাপ্তির পর গ্রাহকের বাড়িতে দ্রæত পৌঁছে যাচ্ছে সার্ভিস প্রোভাইডার। ওয়ালটনের এই সেবা এরইমধ্যে গ্রাহকমহলে ব্যাপক প্রসংশিত হয়েছে।