ঈদুল ফিতর ও বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজার। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে অসহনীয় গরম। ফলে উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে ফ্রিজ ও এসির চাহিদা। আর এই বাড়তি চাহিদা পূরণে এগিয়ে রয়েছে দেশীয় কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে দেশব্যাপী মার্সেল পণ্যের চাহিদা ও বিক্রি ব্যাপক বেড়েছে। গত রমজানের তুলনায় এবার মার্সেল ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার এবং এলইডি টেলিভিশনের বিক্রি ৪০ শতাংশ বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদে দ্বিগুণ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নিয়েছে মার্সেল।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ফ্রিজ, টিভি কিংবা এসির মতো পণ্য কিনতে গেলে তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিতে হয়। পণ্যের উচ্চমান, সাশ্রয়ী মূল্য এবং বিক্রয়োত্তর সেবা। এসব বিবেচনায় বিদেশি ব্র্যান্ডের তুলনায় দেশীয় ব্র্যান্ডের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। বিশেষ করে মার্সেল পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা এখন শতভাগ।
মার্সেলের বিপণন বিভাগের প্রধান ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, গত ঈদের তুলনায় এবার ঈদে দ্বিগুণ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নিয়েছেন তারা। এই ঈদে মার্সেলের টার্গেট ৩০ হাজার ইউনিট ফ্রিজ বিক্রি করা। যা গত ঈদে ছিল ১৫ হাজার। ইতোমধ্যে ফ্রিজ বিক্রিতে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বিক্রয়ের এই ধারা অব্যাহত থাকলে ঈদের অনেক আগেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
মার্সেল পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের এই আস্থার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মার্সেল ফ্রিজের উচ্চ গুণগতমান, রকমারি ডিজাইন ও অসংখ্য কালার, সাশ্রয়ী মূল্য এবং এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টিসহ কম্প্রেসারে সর্বোচ্চ ১০ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা। সর্বোপরি বিশ্বের সর্বোচ্চ প্রযুক্তির সেরা পণ্যের নিশ্চয়তা প্রদান।
এছাড়াও, বিক্রয়োত্তর সেবাকে অনলাইনের আওতায় আনতে দেশব্যাপী পরিচালিত ডিজিটাল ক্যাম্পেইন মার্সেল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখছেন বলে জানান তিনি। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় মার্সেল শোরুম থেকে ক্রেতারা ফ্রিজ, টিভি, এসি কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই পাচ্ছেন আরেকটি ফ্রিজ, টিভি বা এসি সম্পূর্ণ ফ্রি কিংবা আমেরিকা ও রাশিয়া ভ্রমণের সুযোগ। ওইসব সুবিধা না পেলেও মিলছে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিশ্চিত নগদ ছাড়।
জানা গেছে, ঈদে দ্বিগুণ বিক্রির টার্গেট পূরণে এবং রমজান মাসের বাড়তি ক্রেতাচাহিদা মেটাতে মার্সেল বাজারে ছেড়েছে অর্ধ-শতাধিক বৈচিত্র্যময় মডেলের ফ্রিজ। এর মধ্যে রয়েছে ৫২ মডেলের ফ্রস্ট, ২ মডেলের নন-ফ্রস্ট ও ১২ মডেলের ডিপ ফ্রিজ। নতুন এসেছে টেম্পারড গøাস ডোরের ১১টি বৈচিত্র্যময় মডেলের ফ্রস্ট ফ্রিজসহ ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির কম্প্রেসার সম্বলিত ২ মডেলের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর। মার্সেলের এসব রেফ্রিজারেটরে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বস্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এইচএফসি গ্যাসমুক্ত আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। সাধারণ প্রযুক্তির ফ্রিজের তুলনায় মার্সেলের এসব ফ্রিজ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
সূত্রমতে, মার্সেল ফ্রিজে ব্যবহার করা হচ্ছে ন্যানো হেলথ কেয়ার প্রযুক্তি। যা ফ্রিজের ভেতরে সংরক্ষিত খাবারকে সতেজ রাখার পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়া ও দুর্গন্ধমুক্ত রাখে। ফলে ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবারের পুষ্টিগুণ থাকে অক্ষুন্ন। নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হয় বলে ক্রেতাদের কাছে মার্সেল পণ্য হটকেটে পরিণত হচ্ছে।
এদিকে, রমজান মাসে গরমের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এসির বিক্রি। স্থানীয় বাজারে মার্সেলের রয়েছে ১১ মডেলের বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের এসি। যার মধ্যে আছে ১২,০০০ বিটিইউ বা ১ টনের এসি, ১৮,০০০ বিটিইউ বা ১.৫ টনের আয়োনাইজার ও ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি, ধূলা-ময়লা ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত বাতাস প্রবাহে আয়োনাইজার প্রযুক্তির ১.৫ এবং ২ টনের এসি।
মার্সেল টেলিভিশন সেলস বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে গত রমজান মাসের চেয়ে এবার তিনগুণ বেশি বিক্রি হচ্ছে মার্সেল টিভি। বাজারে রয়েছে মার্সেলের ১৯, ২০, ২৪, ২৮, ৩২, ৩৯, ৪০, ৪৩, ৪৯ ও ৫৫ ইঞ্চির চোখ ধাঁধানো ৪৩ মডেলের এলইডি টিভি। এর মধ্যে রয়েছে এইচডি, ফুল এইচডি ও স্মার্ট টিভি। গ্রাহক পর্যায়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে মার্সেলের বিল্ট-ইন ওয়াইফাইযুক্ত ও দ্রæতগতির প্রসেসরসমৃদ্ধ ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি। এছাড়াও ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাচ্ছে বøুটুথ সুবিধার দুইপাশে দুটি করে চারটি ডলবি সাউন্ডবক্সযুক্ত ২০ ইঞ্চির ‘বুমবক্স’ টিভি।
মার্সেল ফ্রিজে গ্রাহকরা পাচ্ছেন এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টির সুবিধা। এছাড়াও, মার্সেল ফ্রিজের কম্প্রেসারে সর্বোচ্চ ১০ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধাসহ ৫ বছরের ফ্রি বিক্রয়োত্তর সুবধিা রয়েছে । এসি ও টিভিতে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টির সুবিধা দিচ্ছে মার্সেল। ইনভার্টার প্রযুক্তির এসির কম্প্রেসারে রয়েছে ৮ বছরের গ্যারান্টি। এছাড়াও, মার্সেল টিভিতে রয়েছে দুই বছরের প্যানেল ও স্পেয়ার পার্টস ওয়ারেন্টিসহ পাঁচ বছরের ফ্রি সার্ভিসের সুবিধা।
আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের আওতায় দেশব্যাপী ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টার থেকে বিক্রয়োত্তর সেবা দেয়া হচ্ছে। হোম সার্ভিসও দেয়া হচ্ছে। গ্রাহকরা যেকোন মোবাইল থেকে ১৬২৬৭ নম্বরে কল করে বছরের ৩৬৫ দিনই পাচ্ছেন কাঙ্খিত সেবা।