রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারের সাথে সংলাপ চালিয়ে গেলেও নেপিডো (মিয়ানমারের রাজধানী) এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই সংকটের সমাধান চাই বলে মিয়ানমারের সাথে সংলাপ চালাচ্ছি। কিন্তু মিয়ানমার সবকিছুতে রাজি থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা কোনো কিছুই করছে না।’
রোববার (১৫ জুলাই) তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সফররত রবার্ট এফ কেনেডি হিউমান রাইটস অ্যাডভোকেসি অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে প্রধানমন্ত্রী তাকে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, তারা মূলত রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী কেরি’কে বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা। সাধারণ মানুষ তাদের চাষাবাদের জমি, গাছপালা, বনভূমি হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়লেও তারা স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জনগণও এমন দুর্ভোগের মুখোমুখি হয়েছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা যেন আরও ভালো অবস্থায় বসবাস করতে পারে, সেজন্য সরকার নতুন জায়গার ব্যবস্থা করছে।
কেরি কেনেডি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, রোহিঙ্গা জনগণের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করাই হচ্ছে তার বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য।
কেরি আরও বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যও পরিদর্শন করেছেন তিনি। কিন্তু সেখানে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে কোনো অবকাঠামো বা কোনো আশ্রয়ের ব্যবস্থা দেখেননি। তিনি বলেন, মিয়ানমার প্রত্যাবর্তনে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি মনে করেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাজ করা উচিত।
কেরি কেনেডি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (এসএসএন) কর্মসূচি ও নারীর ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং এগুলোকে ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ বলে অভিহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কন্যা এবং অটিজমকর্মী সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাসস।