বাংলাদেশের নারী শ্রমিকরা নিজের ও পরিবারের ভাগ্য বদলাতে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন কাজের জন্য। দেশের জন্য বয়ে আনছেন বৈদেশিক মুদ্রা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কাজের খোঁজে সৌদি আরবে যাওয়া বাংলাদেশি অনেক নারী শারীরিক, মানসিক ও যৌন হয়রানির শিকার হয়ে দেশে ফিরেছেন। অভিবাসী নারী শ্রমিক নির্যাতন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় এবং বাইরের শ্রমবাজার নিয়ে কথা বলেছেন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) চেয়ারপারসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী...
প্রশ্ন: দীর্ঘদিন বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়া বন্ধ রেখেছিল সৌদি সরকার। এরপর গৃহখাতে নারী শ্রমিক নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে আবারও খুলে দেয়া হয় শ্রমবাজার। কিন্তু শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি আরব থেকে অনেক নারীই দেশে ফিরে আসছেন। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
তাসনিম সিদ্দিকী: এটা খুবই দুঃখজনক। এরা সবাই যাচ্ছেন কাজের জন্য। কিন্তু অত্যাচারিত হয়ে ফিরে আসছেন। আজকের যুগে এখনও পর্যন্ত নারী শ্রমিককে সবসময়ই চিন্তা করতে হয় শারীরিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির বিষয়ে। এছাড়া বেতন না দেওয়ার সমস্যাও রয়েছে। অন্যান্য সমস্যার ক্ষেত্রে পুরুষ শ্রমিকরা যেভাবে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন তাদেরও সেগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে গত বছর ১ লাখ ৮৭ হাজার নারী কাজের জন্য বিদেশে গেছেন। তার মধ্যে একটা বড় অংশ গেছেন সৌদি আরবে। দেশটিতে এমনিতেই মানবাধিকার কিংবা গণতন্ত্রের কোনো বালাই নেই। সেই জায়গায় বাইরে তো নয়ই, গৃহের অভ্যন্তরে নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেয়াটা আসলে কঠিন। কিন্তু পুরো ব্যাপারটা আমাদের চিন্তা করতে হবে বাজারের ওপর ভিত্তি করে। এইসব অন্যায় হয় বলে ২০০৩ সালের আগ পর্যন্ত নারী শ্রমিক পাঠানোর ওপর বাংলাদেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছিল। কিন্তু ওই সময় ব্যাপক সংখ্যক নারী পাচার শুরু হলো। সৌদি আরবে বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে যে পরিমাণ নারী যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন, পাচারের কারণে তার দশগুণ বেশি নারী যৌন হয়রানি বা অন্যান্য দাস প্রথার শিকার হতেন। সেইসব বিষয় চিন্তা করে ২০০৩ সালে সরকার এক রকম বাধ্য হয় অভিবাসী নারী শ্রমিক পাঠানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে। আমরা অভিবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা চাই, কিন্তু নারী শ্রমিকের বাজার বন্ধ হোক সেটা চাই না।
প্রশ: নারী শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে চুক্তির দুর্বলতা আছে কী?
তাসনিম সিদ্দিকী: দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মধ্যে যতটা করা যায় এখানে সেটা হয়েছে। এখন শ্রমিকদের মোবাইল ফোন রাখতে দেওয়া হচ্ছে। গৃহের অভ্যন্তরে তাদের কাছে ফোন করে খোঁজ নেবে, নজরদারি করবে— চুক্তিতে এইটুকু পর্যন্ত করা গেছে। কিন্তু ওই চুক্তিটা রক্ষা হচ্ছে কি-না সেটার কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা নেই। চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেরে উঠছে না। শুধু বাংলাদেশ নয়, শ্রীলংকা, ফিলিপাইনও পারছে না। এ কারণে তারা ওই দেশে নারী শ্রমিক পাঠানো কমিয়ে এনেছে।
প্রশ: সেক্ষেত্রে ওখানে বাংলাদেশি নারীদের পাঠানো কতটা যৌক্তিক?
তাসনিম সিদ্দিকী: এটা তো বাজারের একটা ব্যাপার। সরকার জানে— কী কারণে ওইসব দেশে নারী শ্রমিক পাঠানো কমানো হয়েছে। কিন্তু সরকার এটাও জানে, এখানকার শ্রমিকরা যেতে চায়। সরকার যদি এদের যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে এরা অবৈধ উপায়ে যাবে। সুতরাং এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই সরকারকে নীতিমালা তৈরি করতে হয়েছে। যে সময়টায় নারী শ্রমিকদের সৌদি আরবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখন বাংলাদেশ চতুর্দিকে পুরুষ শ্রমিকের মার্কেট হারিয়ে ফেলেছিল। অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যা কমে আসছিল। সরকারের ওপর একটা চাপ ছিল। তখন সৌদি সরকারের ওইরকম প্রস্তাবে সরকার রাজি হয়। সরকারের চিন্তা ছিল— পুরুষ শ্রমিক যখন পারছি না, নারীদের পাঠাই। পুরো ব্যাপারটায় দায়বদ্ধতা শুধু রাষ্ট্রের নয়। এর দায়বদ্ধতা গবেষক, সাংবাদিক সবার। কারণ তাদের রিপোর্টেও এসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছিল।
প্রশ: নারী অভিবাসীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার কতটা আন্তরিক বলে আপনার মনে হয়?
তাসনিম সিদ্দিকী: নিরাপত্তার জায়গায় সরকার যতটুকু করা দরকার করছে। কিন্তু এটা আরও কীভাবে বাড়ানো যায় সেটা আমরা চিন্তা করছি। আমরা যে নিগ্রহের ঘটনাগুলো দেখেছি— বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গৃহকর্ত্রী প্রহার করছেন, খেতে দিচ্ছেন না, সন্দেহ করছেন। অত্যাচারটা গৃহকর্ত্রীর ওপর থেকে আসছে। তবে সব গৃহকর্ত্রীই কিন্তু খারাপ নয়। ১ লাখ ২৫ হাজার নারী শ্রমিকের মধ্যে ফিরে এসেছেন ২ থেকে তিন হাজার। তবে সংখ্যা যাই হোক না কেন, আমরা চাই না একজনও অত্যাচারিত হয়ে ফিরে আসুক। নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য দূতাবাসের মাধ্যমে যে নজরদারি করা হচ্ছে সেটা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে একটা বিষয় দাবি উঠেছে— গৃহে যেসব শ্রমিক কাজ করে তাদের ডরমেটরিতে রাখা। সকালে তাদের কাজে নিয়ে যাওয়া এবং ফিরিয়ে আনা। এটা কিন্তু সৌদি সরকার এখন করছে। তার মানে হলো— ওই দেশের সরকারের থেকেও একটা চিন্তা আছে।
আরেকটা হলো, যেখানে নারীরা কাজ করছেন তার ব্যাপারে খোঁজ রাখতে হবে। এ কারণে আমাদের প্রস্তাব হলো— ওইসব দেশে আমাদের যেসব পেশাজীবী এবং তাদের পরিবার আছেন, তাদেরকে নিয়ে এলাকা ভিত্তিতে অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তোলা। এই অ্যাসোসিয়েশন নিয়ম করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। তারা মাসে একবার করে প্রত্যেকটা কর্মীকে ফোন করে তাদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নিতে পারবে। যদি প্রমাণ করা যায়— গৃহকর্ত্রী বা গৃহকর্তা খারাপ, তাহলে ওই দেশের বিচার ব্যবস্থায় নির্যাতিত শ্রমিককে সেখান থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া যায়। তিনি তখন অন্য জায়গায় কাজ করার অধিকার রাখেন। এ রকমভাবে পর পর তিনটা চাকরি তিনি পরিবর্তন করতে পারেন। প্রথমে তারা খারাপ অবস্থায় আছে কি-না সেটা জানতে হবে। তারপর তাদের জন্য শেল্টার হোম গঠন করতে হবে। এরপর আবার তার জন্য চাকরি খোঁজার ব্যবস্থা করতে হবে। সম্পূর্ণ কাজগুলো একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে করতে হবে।
প্রশ: রামরুর মতো বেসরকারি সংস্থা যারা অভিবাসন নিয়ে কাজ করছে, তারা এসব নির্যাতিত শ্রমিকদের নিয়ে কী ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে?
তাসনিম সিদ্দিকী: অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন ১১টা প্রতিষ্ঠান একত্রিত হয়ে একটা জোট গঠন করেছে। এই জোট প্রথমে প্রেস কনফারেন্স করেছে। তারপর র্যালি করেছে, সেক্রেটারি মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করেছে, ৯ পয়েন্টের একটা প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেছেন, তারাও সমস্যাগুলো বুঝতে পারছেন এবং চেষ্টা করছেন সেগুলো সমাধান করতে, পুরো বিষয়টায় একটা নিয়মানুবর্তিতা আনতে।
প্রশ: রিক্রুটিং এজেন্সির চুক্তি অনুযায়ী, চাকরির প্রথম তিন মাস পর্যন্ত শ্রমিকের দায়দায়িত্ব তাদের বহন করতে হয়। এরপর গৃহকর্মী শ্রমিকের দায়দায়িত্ব আর রিক্রুটিং এজেন্সির থাকে না বলে তারা দাবি করছে। নারী শ্রমিকদের অবস্থা মনিটরিংয়ের দায়িত্বটা তাহলে কার? তাদের মনিটরিংয়ের কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে?
তাসনিম সিদ্দিকী: একটা নীতিমালা তৈরি হওয়া দরকার। যেখানে বলা থাকবে, সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠালে সেটা শহর এলাকায় পাঠাবে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে নয়। কারণ যারা ফিরে এসেছেন তাদের ওপর সার্ভে করে দেখা গেছে, শহর এলাকায় যারা থাকেন তারা নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করছেন না। এটা করছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা। তারা নারী শ্রমিকদের ক্রীতদাস বা বিক্রি হয়ে যাওয়া শ্রমিক হিসেবে মূল্যায়ন করছেন। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো এটাও চিন্তা করতে পারে— অভিবাসী নারী শ্রমিকদের নির্দিষ্ট ক্লাস পর্যন্ত পড়াশোনা থাকতে হবে, ওই দেশ সম্পর্কে তাদের ন্যূনতম জ্ঞান বা শিক্ষা থাকতে হবে। এইরকম নৈতিক একটা প্রক্রিয়া তারা করতে পারে। কিন্তু তারা সেটা করছে না। তাদের কাছে যারাই আসে তাদেরকেই তারা পাঠিয়ে দেয়। ইন্সুরেন্স ছাড়া এখন আর শ্রমিকদের পাঠানো উচিত নয়। নারী শ্রমিকদের মনিটরিংয়ের দায়ভারের ব্যাপারটা রিক্রুটিং এজেন্সি এড়াতে পারে না। তাছাড়া নারী শ্রমিক পাঠাতে তারা নির্দিষ্ট ফি পাচ্ছে। তাদের অবস্থা মনিটরের জন্য সরকারকেও দায়িত্ব নিতে হবে। শ্রমিকরা হচ্ছেন সোনার মানুষ। তাদের সেবাটাও সেইরকম দিতে হবে। রাজস্ব বাজেটের টাকা বরাদ্দ করে তাদের সুবিধাগুলো বাড়াতে হবে। তাহলে রিক্রুটিং এজেন্সি না সরকার— কে তাদের মনিটর করবে এই নিয়ে দৌড়াদৌড়ি থাকবে না।
প্রশ: সৌদি থেকে ফিরে আসা অনেক নির্যাতিত নারীকেই তাদের পরিবার গ্রহণ করতে চাইছে না। অথচ পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য আনতেই তারা ছুটে গিয়েছিলেন বিদেশে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
তাসনিম সিদ্দিকী: আমাদের সমাজ এখনও পুরুষতান্ত্রিক। সব দোষ নারীর ওপরই চাপে। একটা পুরুষ বিদেশে গিয়ে কী করলো, এইচআইভি এইডসের শিকার কি-না— সেটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। আর একটা নারী যদি অত্যাচারের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তখন নারী বলেই তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দেশের মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় তারা নিগ্রহের শিকার। নারী শ্রমিক বলেই তাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে যৌনতা দিয়ে। আর পুরুষ শ্রমিক হলে তার যৌনতা কোনো বিষয় নয়, টাকা পয়সাই সব। যতদিন পর্যন্ত আমরা এই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা না বদলাবো ততদিন পর্যন্ত নারীর অবস্থানের পরিবর্তন হবে না। সমাজ না বদলালে এই জায়গায় কিছু করা যাবে না।
প্রশ: এদের পুনর্বাসনের জন্য কী করা যেতে পারে?
তাসনিম সিদ্দিকী: সরকারের দায়িত্ব এদের পুনর্বাসনের। কয়েকটা দৃষ্টান্তমূলক কেসে যদি এদের ওখানে রেখে কেস ফাইল করা যায় নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে তাহলে সেই ব্যক্তি বিশাল জরিমানা দিতে বাধ্য। ওই দেশের সরকার যথেষ্ট শক্ত এইসব ব্যাপারে। সরকার এটা করতে পারছে না, কারণ তাদেরকে দীর্ঘদিন শেল্টার হোমে রাখার তাদের আলাদা ফান্ড নাই। কিন্তু দায়িত্বটা সরকারের। তাদের শেল্টার হোমে রেখে, আইনজীবী নিয়োগ করে কেস লড়তে হবে। এছাড়া পরিবার গ্রহণ করতে না চাইলে অনেক বেসরকারি সংস্থা আছে, তাদের পুনর্বাসনে এগিয়ে আসতে পারে। পরিবারকে বুঝিয়ে মেয়েটাকে ঘরে পাঠানো গেলেও আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় সমাজ তাকে গ্রহণ করবে না। সেক্ষেত্রে তার অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটানো ছাড়া পুনর্বাসন সম্ভব নয়।
প্রশ: হংকং, জাপান, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে নতুন করে নারী অভিবাসী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। সেক্ষেত্রে সৌদি আরবের ঘটনার মতো নারীদের একই সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?
তাসনিম সিদ্দিকী: এসব দেশ অনেক উন্নত। হংকং বা অন্য দেশগুলোতে যৌন হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার হয়েছে গৃহকর্মীরা— এমন সংবাদ খুব কমই আসে। বরং ওইসব দেশে বাড়ির মধ্যে হয়তো শুকর রান্না হয়, কুকুর পোষা হয়— এগুলো অনেক অভিবাসী শ্রমিক ধর্মীয় কারণে সহ্য করতে না পেরে দেশে ফিরে আসে। যারা নারী শ্রমিকদের ওইসব দেশে পাঠান, তাদের উচিত ওখানকার কাজের পরিবেশ, বাসা হলে বাড়ির পরিবেশ সম্পর্কে তাদের জানানো। বাইরের বাজারে কাজ করতে হলে এগুলো চিন্তা করতে হবে। এর পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কেন সবকিছু ঢাকাকেন্দ্রিক, কেন বিকেন্দ্রীকরণ হচ্ছে না— প্রশ্নগুলো ব্যাপক। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে বাইরে কর্মী পাঠানোর চাপটা কমে আসবে।
এছাড়া অভিবাসী নারীদের জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা প্রয়োজন। দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে যেহেতু কোনো রাষ্ট্রই এগুতে পারছে না, সেক্ষেত্রে বহুপাক্ষিকভাবে মানবাধিকারের ন্যূনতম একটা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করা হোক। সেখানে রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করা হোক— তারা স্ট্যান্ডার্ডের বাইরে কোনো কর্মী নিয়োগ করতে পারবে না। অন্যদিকে আঞ্চলিক যে ফোরাম আছে তারা যদি সিদ্ধান্ত নেয়, কোনো দেশে নারী শ্রমিকের ওপর অত্যাচার হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই দেশে তারা অভিবাসন বন্ধ করে দেবে, তাহলে এটা খুবই কার্যকর হবে। এ রকম জোট থাকলে পাচার বন্ধ হবে, সেইসঙ্গে এক দেশের অভিবাসী শ্রমিক নেওয়া বন্ধ হলে আরেক দেশের খুলে যাবে— এ রকম সুযোগও হবে না। আঞ্চলিক জোটই ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন, কর্মঘণ্টা ইত্যাদি ঠিক করে দেবে।