৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহঋণ পাবেন সরকারি কর্মচারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-০৮-০১ ০৭:৫৬:৪৩
* সুদ হার ৫ শতাংশ
* ৫৬ বছরের বেশি বয়স হলে ঋণ নয়
সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালার পরিপত্র জারি করা হয়েছে। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয় তা জারি করে। এ পরিপত্রের আগে একজন চাকরিজীবী সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে পারতেন না।
নতুন এ ঋণ সিলিংয়ের সুদ হার হবে ১০ শতাংশ। এর মধ্যে ৫ শতাংশ পরিশোধ করবে ঋণগ্রহীতা, বাকিটা সরকার ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করবে। তবে ঋণ নিয়ে অবসরে গেলে সরকার ভর্তুকি দেবে না। সেক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতাকে ১০ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে।
কোনো কর্মকর্তার বয়স ৫৬ বছরের বেশি হলে এ ঋণ পাবেন না। বাড়ি নির্মাণে এককভাবে, জমি কেনাসহ বাড়ি নির্মাণে গ্রুপ, জমিসহ তৈরি বাড়ি কেনায় একক এবং ফ্ল্যাট কেনায় ঋণ নেয়া যাবে। তবে কোনো চাকরিজীবীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজ এবং দুর্নীতি মামলার ক্ষেত্রে চার্জশিট দাখিল হলে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋণ পাবেন না।
পাশাপাশি চুক্তিভিক্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী এ ঋণ পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন না। পরিপত্রে বলা হয়, পঞ্চম গ্রেড ও তার উপরের কর্মকর্তাদের জন্য সিলিং তিনটি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরী, সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদর পর্যায়ে এসব গ্রেডের কর্মকর্তা গৃহ নির্মাণ ঋণ পাবেন ৭৫ লাখ টাকা। একই স্কেলের কর্মকর্তারা জেলা সদরের জন্য ঋণ নিলে ৬০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা পাবেন।
নবম থেকে ষষ্ঠ গ্রেডের চাকরিজীবীরা ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৬৫ লাখ টাকা, জেলা সদরে ৫৫ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। একই ভাবে ১৩ম থেকে ১০তম গ্রেডের চাকরিজীবীরা পাবেন ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ টাকা, জেলা সদরে ৪০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ৩০ লাখ টাকা।
জাতীয় বেতন স্কেলের ১৭তম থেকে ১৪তম গ্রেডের চাকরিজীবীরা পাবেন ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ টাকা, জেলা সদরে ৩০ লাখ টাকা এবং অন্যান্য এলাকায় ২৫ লাখ টাকা। সর্বশেষ স্তরে ২০তম থেকে ১৮তম গ্রেডের চাকরিজীবীরা পাবেন ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের জন্য ৩৫ লাখ টাকা, জেলা সদরে ২৫ লাখ টাকা এবং অন্য এলাকায় ২০ লাখ টাকা।
সরকারি চাকরিজীবীরা দেশের যে কোনো এলাকায় বাড়ি নির্মাণ, জমিসহ তৈরি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য এ ঋণ পাবেন। ঋণ পাওয়ার জন্য প্রস্তাবিত ভূমি বা ফ্ল্যাট সম্পূর্ণ দায়মুক্ত হতে হবে। ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে শুধু রেডি ফ্ল্যাট কেনার জন্য এ ঋণ দেয়া হবে।
ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে ২০ বছর। ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়ার ১ বছর পর ঋণ পরিশোধ শুরু করতে হবে। তবে ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ঋণ প্রাপ্তির ৬ মাস পর কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। ঋণ নিয়ে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বেচ্ছায় চাকরি ত্যাগ করলে বা সরকার বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালে বা চাকরিচ্যুত করলে আদেশ জারির তারিখ থেকে অবশিষ্ট সময়ে ঋণের সুদের ভর্তুকি দেয়া হবে না। ঋণ নিয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার পারিবারিক পেনশন থেকে কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।