আগামীকাল (বুধবার) ঈদুল আজহা। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদ আনন্দে বাধ সাধতে পারে বৃষ্টি।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়ার যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
একইসঙ্গে মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার গরম আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
যদিও কাগজে-কলমে আষাঢ় ও শ্রাবণে ভর করে বর্ষা বিদায় নিয়েছে। তবে প্রকৃতি থেকে বিদায় নেয়নি বর্ষা, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ বর্ষার আমেজ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
বেশ কয়েক দিন খরার পর সোমবার ঢাকায় কিছুটা বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই মেঘে ছেয়ে আছে ঢাকার আকাশ। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কয়েক পশলা হালকা বৃষ্টিও হয়েছে।
ঈদের দিনের আবহাওয়ার বিষয়ে আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জাগো নিউজকে বলেন, ‘ধরতে পারেন ঈদের দিন গরম থাকবে। আজকের থেকে আগামীকাল তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
তিনি বলেন, ‘বুধবার ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বুধবার ঢাকায় সকালের দিকে আকাশ মেঘলা থাকতে পারে ও এ সময়ে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হতে পারে। তবে বিকেলের দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি।’
‘বৃষ্টি হওয়ার সময়ের তারতম্য হতে পারে। দেখা যাবে কোথাও সকালে বৃষ্টি হবে কোথাও বিকেলে হবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী দেশের দক্ষিণাংশে বৃষ্টি বেশি হবে। উত্তরাংশে বৃষ্টিটা কম হবে। কক্সবাজার, হাতিয়া, খেপুপাড়ার দিকে সকালে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এখনও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি রয়েছে জানিয়ে রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা, রংপুরসহ দেশের বেশির ভাগ জায়গায় দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রয়েছে।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা-বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধররে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা উপকূলে অবস্থান করছে। মৌসুমী অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।
আজ ঢাকায় সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৫টা ৩৬ মিনিটে, সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ২৭ মিনিটে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ৩৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গোপালগঞ্জে ২৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
লঘুচাপ: সাগরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
অপরদিকে সর্বশেষ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য অব্যাহত রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।