২০২০ সালের আগে পুঁজিবাজারে আসছে না নতুন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানি

ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৮-০৮-২২ ১৯:৪৪:৪৬


২০২০ সালের আগে পুঁজিবাজারে দেখা মিলছে না নুতন কোন ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির। নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করেলেও নুতন ৯টি তফসিলি ব্যাংক ও ১৬টি বিমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে ব্যর্থ হয়েছে।

জানা যায়, চলতি বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা ছিলো ব্যাংকগুলোর। কিন্তু নতুন ব্যাংগুলোর মধ্যে ৫টিকে নির্ধারিত সময়ের পর আরো ৩ বছর বাড়তি সময় দিয়েছে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক। বাকি ৪টি ব্যাংককেও বাড়তি সময় দেওয়া হচ্ছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

অন্যদিকে ১৬টি বিমা কোম্পানির কোনটিই পুঁজিবাজারে আসার মতো সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে ২০১২ সালে অনুমোদন পাওয়া এসব কোম্পানিগুলোর কোনোটিই আগামী ৪ বছরের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) পুঁজিবাজারে আসতে পারবে না। এর কারণ হলো-গত ৩ বছরে কোম্পানিগুলো মুনাফায় আসতে পারেনি। আগামী ৩ বছরের মধ্যেও মুনাফায় ফেরা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কোম্পানিগুলো।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ম অনুসারে কোনো কোম্পানিকে আইপিওতে আসতে হলে শেষ ৩ বছর ভালো মুনাফায় থাকতে হবে। অর্থাৎ কোম্পানিকে সর্বশেষ ৩ বছর আর্থিক প্রতিবেদনে মুনাফা দেখাতে হয়।

২০১২ সালে দুই দফায় ৯টি ব্যাংককে ব্যবসার অনুমোদন দেয় ব্যাংলাদেশ ব্যাংক। যার প্রধান শর্ত ছিলো ব্যবসা শুরুর ৩ বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে আসতে হবে। একই বছরে ১৬টি বিমা কোম্পানিকে দেশের বিমা খাতে ব্যবসা করার জন্য অনুমোদন দেয় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

বিমা আইন অনুসারে, নিবন্ধিত হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারের আইপিওতে আসতে হয়। এরপর যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে আরো ৬ মাস বাড়াতে পারে। বিমা আইন-২০১০ এর ১৩০ ধারা অনুযায়ী আইপিওতে আসার নির্ধারিত সময় পার হলে প্রথমে কোম্পানিকে মূল জরিমানা হিসেবে এককালীন ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। এরপর যতোদিন আইপিওতে আসতে না পারবে, ততোদিন কোম্পানিকে প্রতিদিনের জন্য ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।

বিমা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- জেনিথ ইসলামী লাইফ, স্বদেশ লাইফ, যমুনা, গার্ডিয়ান, মাকেন্টাইল, প্রটেক্টিভ, আলফা, বেস্ট, চাটার্ড, ডায়মন্ড, এনআরবি গ্লোবাল, সেনা কল্যাণ ও সিকদার জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইডিআরএ’র এক পদস্থ কর্মকর্তা জানান, চলতি বছরের শেষ দিকে নতুন কোম্পানির ব্যবসার ৩ বছর শেষ হবে। কোম্পানিগুলোর ব্যবসার কন্ডিশন খুব ভালো না। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে ভালো মুনাফায় আসতে পারবে বলে মনে হয় না।

অন্যদিকে পুঁজিবাজারে চলমান মন্দার কারণে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহ নেই নতুন ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলোর অনুমোদনের সময় যে সম্মতিপত্র (এলওআই) দেওয়া হয়েছিল, তাতে শর্ত ছিল, কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে। সে হিসাবে চলতি বছরের মধ্যেই নতুন ব্যাংকগুলোর বাজারে তালিকাভুক্ত হতে আইপিওতে শেয়ার ছাড়ার কথা। কিন্তু সেই শর্ত পূরণ করছে না ব্যাংকগুলো। বরং এ অবস্থায় নতুন নয়টি ব্যাংককে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আরও তিন বছর পর্যন্ত বাড়তি সময় দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০১২ সালের শুরুতে দুই দফায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ছয়টি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের তিনটি নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়। এর মধ্যে দেশীয় উদ্যোক্তাদের ব্যাংকগুলো হলো- মেঘনা, মধুমতি, মিডল্যান্ড, ফারমার্স, ইউনিয়ন এবং সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। অন্যদিকে, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য যে তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো- এনআরবি, এনআরবি গ্লোবাল ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক।