ডিএসইর হিসাবে ব্রোকারদের ৯৪৬ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-০৯-০৩ ১৯:৩২:৪১
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) হিসেবে সিটি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় টাকা জমা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএসইর উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
এদিকে মঙ্গলবার ১১৭ এর মাধ্যমে চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছে শেয়ার হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাসেম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ১১৭ এর মাধ্যমে শেয়ার হস্তান্তর হবে। পরে ডিএসইর পর্ষদসভায় তাদের প্রতিনিধি অংশ নিবে।
ডিএসই সূত্র মতে, চীনের দুই চীনের দুই পুঁজিবাজার সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনবে। এই জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) দিচ্ছে ৯৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৫ টাকা।
এর আগে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেছিলেন,ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী ডিএসইর ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে চীনা কনসোটিয়ারে কাছে। চীনের কাছ পাওয়া এ টাকার ৮০-৯০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট দূর করতে এই টাকা বিনিয়োগ করবো। সেই লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীকে প্রস্তাবও দিয়েছি যাতে করে এই টাকার ওপর কর প্রত্যাহার করেন।
ডিএসই সূত্র জানায়, এই টাকা জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট করাসহ অন্যান্যসব কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন সর্বশেষ এ টাকার ওপর থাকা ১৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার এবং ব্রোকারেজ হাউজের লেনদেনের ওপর উৎসে কর দশমিক ০১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সাংহাই ও শেনজেন চীনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুঁজিবাজার। বাজার মূলধনের দিক বিশ্বের সেরা দশ স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকায়ও রয়েছে এ দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। ফলে তারা ডিএসইর মালিকানায় আসায় দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদা পেয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আকৃষ্ট হবে। এ ছাড়াও কারিগরিভাবে শক্তিশালী হবে বলে জানান তিনি।
চলতি বছরের ১৪ মে রাজধানীর লা-মেরিডিয়ান হোটেলে ডিএসইর স্ট্রাটেজিক পার্টনার (কৌশলগত বিনিয়োগকারী) হিসেবে সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে চীনা স্টক এক্সচেঞ্জ। অনুষ্ঠানে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এ এম মাজেদুর রহমান, শেনজেনের প্রেসিডেন্ট ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ওয়াং জিয়ানজুন এবং সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জর চেয়ার অব সুপারভাইজরি বোর্ডের প্যান জুইজিয়ান চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন, ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হাশেম, ডিএসইর পরিচালক ও সদস্য এবং পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে তার আগে নানা টালবাহার পর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চীনা কনসোর্টিয়ামের আবেদনের প্রস্তাব গত ৩ মে অনুমোদন দেয় বিএসইসি। ডিএসইর এ মালিকানা পেতে চীনা কনসোর্টিয়াম ছাড়াও ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাক-এর কনসোর্টিয়াম আবেদন করেছিলো।