দেশের রফতানি খাতকে উৎসাহিত করতে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের নগদ সহায়তার খাত ও হার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরে ২৬টি পণ্য খাতে রফতানিতে ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। এরসঙ্গে চলতি অর্থবছরে নতুন করে ফার্মাসিউটিক্যাল ও মোটরসাইকেলসহ ৯টি পণ্য খাতকে নগদ সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে পণ্য রফতানির বিপরীতে এই সুবিধা পাবে রফতানিকারকরা।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বৈদেশিক লেনদেনে নিয়োজিত অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, চলতি বছর থেকে নতুন ৯ ধরনের পণ্য রফতানির বিপরীতে ভর্তুকি বা নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। পণ্যগুলো হলো- ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, ফটোভোলটাইক মডিউল, মোটরসাইকেল, কেমিক্যাল পণ্য (ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড), রেজার ও রেজার ব্লেডস, সিরামিক দ্রব্য, টুপি, কাঁকড়া ও কুঁচে (হিমায়িত ও সফটসেল, পরিবেশ ও বন বিভাগের ছাড়পত্র গ্রহণ সাপেক্ষে) ও গলিত শিট। প্রসঙ্গত, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৬ ধরনের পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা পেয়েছেন রফতানিকারকরা।
২০১৮-১৯ অর্থবছরেও এসব পণ্য রফতানি মূল্যের বিপরীতে সর্বনিম্ন ২ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে সিনথেটিক ও ফেব্রিকসের মিশ্রণে তৈরি পাদুকা, তথ্যপ্রযুক্তি, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রিডিয়েন্টস (এপিআই), অ্যাকুমুলেটের ব্যাটারি ও নারকেল ছোবড়ার আঁশ দ্বারা উৎপাদিত পণ্য।
এছাড়া দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৪ শতাংশ, বস্ত্র খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা ৪ শতাংশ, নতুন পণ্য বা বাজার সম্প্রসারণ সহায়তা (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইইউ ছাড়া) ৪ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতে রফতানিকারকদের জন্য বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা ২ শতাংশ, হোগলা, খড়, আখের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে উৎপাদিত হস্তশিল্প রফতানিতে নগদ সহায়তা ২০ শতাংশ, কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্যে ২০ শতাংশ, গরু-মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং ও রগ (হাড় ছাড়া) রফতানিতে ১০ শতাংশ, হালকা প্রকৌশল পণ্য রফতানিতে ১৫ শতাংশ, শতভাগ হালাল মাংস রফতানিতে ২০ শতাংশ, বরফ আচ্ছাদনের হারভেদে হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রফতানি থেকে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে।
চামড়াজাত পণ্য ও আসবাব রফতানিতে ১৫ শতাংশ, জাহাজ, প্লাস্টিক পণ্য ও পেট বোতল- ফ্লেক্স রফতানিতে ১০, শস্য ও শাকসবজির বীজ এবং পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রফতানিতে ২০ শতাংশ, পাটজাত দ্রব্যাদি রফতানিতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে।
এছাড়া চলতি অর্থবছরে আলু রফতানিতে ২০ শতাংশ, সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রফতানিতে ১০ শতাংশ এবং পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রফতানিতে ১০ শতাংশ এবং আগর ও আতর রফতানিতে ২০ শতাংশ ভর্তুকির বিষয়টি অপরিবর্তিত আছে।