হজ আমাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে : মিশা

প্রকাশ: ২০১৫-০৯-২২ ১৫:৪০:৪৭


Misha

দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয় করছেন মিশা সওদাগর। পর্দায় যাকে দেখা মাত্র মন্তব্য করা হয়, ‘এই হাজির হলো বদ’। সেই মানুষটি বাস্তবে কেমন?

মিশার পরিচিত জনদের দাবি, তিনি বন্ধুবৎসল মানুষ। আট-দশজন সাধারণ মানুষের মতোই তার জীবনযাপন। ঘরোয়া আড্ডা কিংবা দূরে কোথাও বেড়াতে গেলেও তিনি কখনো ড্রিংস কিংবা সিগারেট স্পর্শ করেন না।
আর মিশার দাবি, তিনি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি নিজেকে খুব বিশ্বাস করি। আমার ধারা কী হবে, আর কী হবে না তা আগে থেকেই ধারণা করতে পারি।

তিনি জানান, ‘ধর্মের প্রতি আমার দুর্বলতা ছোটবেলা থেকেই। কাজের যত ব্যস্ততাই থাকুক আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি।’
গত বছর সপরিবার নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন পবিত্র হজ পালন করতে। এর আগে ২০০৭ সালে প্রথমবার হজ পালন করেছিলেন তিনি।

প্রশ্ন ছিল, হজ পালনের আগে এবং পরের জীবনের মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন কিনা?  ‘অবশ্যই অনেক পার্থক্য খুঁজে পেয়েছি। হজ করার আগে আমি স্বপ্ন দেখতাম আল্লাহ আমাকে যদি সামর্থ্য দেন, আমি মানুষের উপকার করব, পাশাপাশি ইসলামের দায়িত্ব হিসেবে হজ পালন করবো।

আর হজ পালনের পর আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক কিছুকে এখন ভাবি ভিন্নভাবে। সত্যি কথা বলতে কী, আগে ধর্মের অনেক বিষয়কে হাল্কা মনে হতো। চিন্তা করতাম একটি অন্যায় হয়ে গেছে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব। কিন্ত এখন ভাবি, অন্যায়টা করার আগে আমি কেন চিন্তা করলাম না, আমি তো বোধসম্পন্ন মানুষ। তা সত্ত্বেও আমার ধারা কিভাবে এই ধরনের হীন কাজ করা সম্ভব হলো। এই প্রশ্নগুলো আমাকে সব সময় সচেতন থাকতে সহযোগিতা করে।’

মিশা বলেন, আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করি, এবং খল চরিত্রে। এই নিয়ে ইতিবাচক, নেতিবাচক দুই ধরনের মন্তব্য শোনতে হয় আমাকে। এটাকে আমি কাজের স্বার্থকতা হিসাবে দেখি। যারা নেতিবাচক মন্তব্য করেন, তারা আমার পর্দার জীবনের সাথে মিশে যান বলেই ওই ধরনের মন্তব্য করেন। আর যার ইতিবাচক মন্তব্য করেন তারা আমার অভিনয়টাকে ভালোবাসেন। এটা সত্যিই অনেক বড় পাওয়া।’

misa-family

পরিবার সদস্যদের সাথে মিশা এফডিসি আয়োজিত নতুন মুখ কার্যক্রমে নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৬ সালে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন মিশা সওদাগর। ১৯৯০ সালে ছটকু আহমেদ পরিচালিত ‘চেতনা’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন নায়ক হিসেবে। এর কিছুদিনের মধ্যেই ‘অমরসঙ্গী’ ছবিতে দ্বিতীয়বারের মতো নায়ক হিসাবে অভিনয় করেন। পর মুক্তিপ্রাপ্ত দুটি ছবিই ফ্লপ হয়।

এরপরই ট্র্যক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তমিজ উদ্দিন রিজভীর ‘আশা ভালোবাসা’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন খল চরিত্রে। এখানে তার অভিনয় প্রশংসিত হয় চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের কাছে। তারপর আর পিছনের তাকাতে হয়নি তাকে। এখন পর্যন্ত ৮০০ বেশি ছবিতে অভিনয় করা হয়ে গেছে তার।