সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে মাথা উঁচু করে ৭ দফা দাবি রাজপথেই আদায় করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (২ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের সংলাপে সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনিসংকেত। সংলাপ নিয়ে মানুষের মনে যে আশা জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে।’
‘সংলাপে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা-স্বার্থের লীলাধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুণ্ডপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি’—বলেন রিজভী।
‘প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করা মানে তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করা’— এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে মাথা উঁচু করে সাত দফা দাবি রাজপথেই আদায় করতে হবে। দুর্জয় সাহস নিয়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে।’
রিজভী বলেন, ‘সংলাপের জিগির তুলে একদিকে জনগণকে দেখাচ্ছে তারা কত আন্তরিক, অন্যদিকে সমান তালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রেখেছে। গতকালও গায়েবি মামলায় ঝিনাইদহে অসুস্থ পল্লী চিকিৎসক ও বৃদ্ধ আব্দুল বারীর পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে তোলা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার গণভবনের সংলাপের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক মামলার তালিকা চেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন- এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘তার দশ বছরের শাসনামলে বিরোধী দলের কাদের নামে মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে সেটা কি প্রধানমন্ত্রীর অজানা? গতকাল সংলাপ শেষ হওয়ার পরই আমরা দেখলাম-টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ ইথেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে পুলিশি শক্তির ব্যবহার ছাড়া আওয়ামী জোট সরকারের আর কোনো ভিত্তি নেই।’
রিজভী আরো বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাশূন্য করে একতরফা নির্বাচনের নিখুঁত পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রযন্ত্র হাতে থাকলে সবকিছুই করা যায়। ক্ষমতাসীনদের মামলাগুলো ঝরে যায় আর বিরোধীদেরগুলো পুষে রাখা যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।