>> আগে শুধু তৈরি পোশাক খাতে দেয়া হতো এই ঋণ
>> সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত ১২টি থেকে এখন ১৫টি
>> বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে যুক্ত হলো পাঁচটি পণ্য
>> গ্রিন শ্রেণিভুক্ত হবে প্লাস্টিক শিল্প খাত
বাংলাদেশ ব্যাংকের রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে সহজ শর্তে স্বল্প সুদে সব রফতানি খাতে ঋণ দেয়ার বিধান রেখে ‘রফতানি নীতি ২০১৮-২১’ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর আগে এ তহবিল থেকে শুধু তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে পারতেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বেঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
তিনি বলেন, বলেন, নতুন নীতিতে তৈরি পোশাকে যেমন সহজ শর্তে স্বল্প সুদে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইডিএফ ফ্যান্ড থেকে ঋণ নিতে পারে তেমনি অন্যান্য রফতানিকারকরাও একই শর্তে ঋণ নিতে পারবে। এ ছাড়া নতুন নীতিতে রফতানি পণ্যে উৎসাহব্যঞ্জক সুবিধা প্রদানের জন্য মূল্য সংযোজন হার ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে।
শফিউল আলম বলেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত আগে ১২টি ছিল। এখন তিনটি বাড়িয়ে ১৫টি করা হয়েছে। নতুন তিনটি পণ্য হচ্ছে ‘ডেনিম’, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই), বিকারক (রিয়েজেন্ট) ও জুতা (চামড়াজাত, অচামড়াজাত ও সিনথেটিক)।
বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতে বর্তমানে ১৪টি পণ্য রয়েছে। এর সঙ্গে আরও পাঁচটি পণ্য যুক্ত করা হয়েছে। নতুন পাঁচটি পণ্য হলো- লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, সোলার এনার্জি, কাজু বাদাম (কাঁচা এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ), জীবন্ত ও প্রক্রিয়াজাত কাঁকড়া এবং খেলনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রফতানি নিষিদ্ধ পণ্যে তেমন নিষিদ্ধ (সংখ্যা বাড়ানো) করা হয়নি। তবে ওয়েড ব্লু চামড়াজাত থেকে প্রাপ্ত পণ্যকে রফতানি পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
‘শর্তসাপেক্ষে রফতানি পণ্যের তালিকায় নতুনভাবে ওজনস্তর ক্ষয়কারি দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুসরণ করে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি সাপেক্ষে রিকভারি, রিক্লেমিং বা রিসাইক্লেনিংকৃত ওজনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য পুনঃরফতানি পণ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, প্লাস্টিক খাতের প্রচ্ছন্ন রফতানিকারক ও সাধারণ রফতানিকারক- উভয়ের জন্য ইডিএফ (রফতানি উন্নয়ন) তহবিলে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজনীয় মোল্ড স্থাপনে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি প্লাস্টিক পণ্যের পরিচিতি এবং রফতানি উন্নয়নের নিমিত্তে অধিক হারে আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
‘প্লাস্টিক পণ্য ও গার্মেন্ট এক্সেসরিজ পণ্যের মান পরীক্ষা ও সনদ প্রদানের জন্য অ্যাক্রিডেটেড ল্যাবরেটরি (অনুমোদিত পরীক্ষাগার) স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া বিএসটিআইয়ে (বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড অ্যান্ট টেস্টিং ইনস্টিটিউট) সব পণ্যের মান পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। প্লাস্টিক শিল্প খাতকে গ্রিন শ্রেণিভুক্তকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্লাস্টিক পণ্যের জন্য গঠিত বিজনেস কাউন্সিলকে পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’,- বলেন সচিব।
২০১৫-১৮ মেয়াদের রফতানি নীতির মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুন। সেই হিসেবে নতুনটির যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, রফতানি নীতি ২০১৮-২১ গেজেট আকারে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত আগের নীতি কার্যকর থাকবে।