সাতশ কোটি টাকা পেয়েছে আইসিবি

:: আপডেট: ২০১৮-১১-০৭ ০৬:২৫:২৯


বন্ড বিক্রির সাতশ কোটি টাকা হাতে পেয়েছে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি)। গতকান মঙ্গলবার অগ্রনী ব্যাংক থেকে এই টাকা পেয়েছে বলে সানবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক।

তিনি সানবিডিকে বলেন, শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হিসাবে আইসিবি সবসময় সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানটি আরও কী কী ভূমিকা নেওয়ার কথা ভাবছে, নতুন বিনিয়োগের অবস্থা কী হবে। আমরা বন্ড বিক্রির টাকা বাবদ গতকাল অগ্রনী ব্যাংক থেকে সাতশ কোটি টাকা পেয়েছি। এই টাকা হয়তোবা আজকে (বুধবার,৭ অক্টোবর) হিসেবে জমা হবে। এই টাকা দিয়ে বাজারকে সাপোর্ট দেয়া হবে। আশা করছি অল্প কিছু সময়ের মধ্যে বাকী টাকা হাতে পেয়ে যাবো।

এর আগে গত ১৭ জুলাই আইসিবির ২ হাজার কোটি টাকার নন-কনভারটিবল ফিক্সড রেট সাবর্ডিনেট বন্ড ছাড়ার অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কিছু শর্ত সাপেক্ষে এই বন্ডের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিলো বন্ডের ইউনিট বিক্রির অর্থের কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ আইসিবিকে বাধ্যতামূলক শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে হবে। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্সে ১৯৯৬’র ২সিসি ক্ষমতা বলে এ শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছে।

বিএসইসি জানায়, বন্ডটির মেয়াদ হবে ৭ বছর। এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- নন-কনভারটিবল, পূর্ণ অবসায়ন, ফিক্সড রেট এবং অতালিকাভুক্ত সাবর্ডিনেট বন্ড। বন্ডটি সাত বছরে পূর্ণ অবসয়ন হবে। এই বন্ড বিভিন্ন ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট হাউস এবং উচ্চ সম্পদশালী বিনিয়োগকারীরা প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ক্রয় করতে পারবেন। বন্ডটির অভিহিত মূল্য এক কোটি টাকা।

বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে উত্তোলন করা অর্থ আইসিবি চারটি উদ্দেশ্যে ব্যয় করবে বলে জানায় বিএসইসি। এগুলো হলো :

এক. প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বাজার সৃষ্টিকারী হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন।

দুই. এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও এনআরবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফান্ড এর উদ্যোক্তা হিসেবে বিনিয়োগ।

তিন. অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সরকারের প্রাধিকারভুক্ত খাতে বিনিয়োগ।

চার. পিপিপি প্রকল্পে বিনিয়োগ।
ওই সিদ্ধান্তের পর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কর্পোরেট শেয়ারহোল্ডারের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নিকটও এই বন্ড ইস্যু করা হবে। আইসিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাইফুর রহমান।

এদিকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আইসিবির ইস্যু করা সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থ ব্যাংকের শেয়ারবাজার বিনিয়োগ সীমার বাইরে থাকবে। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে আইসিবির সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ২৬ ক (১) (খ) ধারার বিধান পরিপালন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

ব্যাংক কম্পানি আইনের ১২১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অব্যাহতি প্রদান করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই প্রজ্ঞাপনে সই করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এতোদিন শেয়াবাজারের মাধ্যমে কেনা যেকোনো ধরনের বন্ড ব্যাংকের শেয়ারবাজার বিনিয়োগ সীমার অন্তর্ভুক্ত হতো। আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলো তার আদায়কৃত বা পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশের বেশি শেয়াবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে না।