রাজধানীর শেখ রোরহানউদ্দিন কলেজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কলেজের চতুর্থ শ্রেণির এক নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, কলেজের মাকের্টিং বিভাগের শিক্ষক তানভীর আহমদ হিজল কয়েকদিন আগে কলেজে একা পেয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানি করে। তবে লজ্জায় বিষয়টি চেপে রাখলেও পরে আবারো কু-প্রস্তাব দেয় হিজল। পরে ভুক্তভুগী বিষয়টি একজন শিক্ষিকাকে জানায়। ওই শিক্ষিকা ঘটনাটি অধ্যক্ষকে জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
রোববার (১১ নভেম্বর) কয়েকজন শিক্ষক অধ্যক্ষের কাছে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চায়। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান কলেজ প্রধান।
অধ্যক্ষ আব্দুস রহমান বলেন, নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানির বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু লিখিত অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, কর্মচারীকে যৌন হয়রানির ঘটনাটি শোনার পরই অভিযুক্তকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি। তবে বিষয়টি সত্য নয় বলে সে জানিয়েছেন। তাই বিষয়টি তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে অপরাধীকে চাকরিচ্যুতসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। কলেজের অন্য বিভাগের এক শিক্ষিকার সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই শিক্ষিকার সংসার ভেঙে যায়। পরে তিনি আরেকটি বিয়ে করলেও তার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রাখতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিক্ষিকার দ্বিতীয় স্বামী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় ডায়েরি করেন এবং তার স্ত্রীকে বিরুক্ত না করতে সতর্ক করেন।
শিক্ষকরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক কালেজের আরও এক শিক্ষিকাকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন। বিষয়টি তিনি অধ্যক্ষসহ সিনিয়র শিক্ষকদের জানালেও কোনো লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। এ ছাড়া একাধিক ছাত্রীকেও তিনি উত্যক্ত করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া তার শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি একটি টেলিভিশন রাজধানীর প্রশ্নফাঁস চক্রকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই শিক্ষকের অপকর্মের তথ্য উঠে আসে। বিষয়টি নিয়ে কলেজ গভনিং বডি একটি দতন্ত কমিটি গঠন করলেও তার বিরুদ্ধে আজও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক তানবীর আহমেদ হিজল জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষক শত্রুতা করে এসব মিথ্যা প্রচার করছেন। তিনি এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন না লেখারও সুপারিশ করেন।
কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশীদ জানান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির ঘটনায় অধ্যক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগ প্রমাণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোনো চরিত্রহীনকে শিক্ষক হিসেবে কলেজে রাখা হবে না বলেও জানান তিনি।