প্রায় ১৫ বছর পর চলচ্চিত্রেঅিভিনয় করছেন অপি করিম। দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণাধীন ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ ছবিতে দেখা যাবে তাকে। এর শুটিং করতে তিনি এখন কলকাতায়। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই ছোটগল্প ‘বিষাক্ত প্রেম’ ও ‘সুবালা’ অবলম্বনে সাজানো হয়েছে ছবিটির চিত্রনাট্য।
জানা গেছে, ছবিটিতে অপির চরিত্রের নাম সোমা। মেয়েটি কলকাতার। সে বিবাহিতা। স্বামী আর একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। তবে স্বামী বেকার। এ কারণে সন্তানকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াতে চাকরি করে সোমা। কলকাতার পর ঢাকায় ছবিটির কিছু অংশের শুটিং হবে।
২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় ‘ব্যাচেলর’ ছিল অপি করিমের প্রথম চলচ্চিত্র। এরপর আর বড় পর্দায় পাওয়া যায়নি তাকে। ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’-এর মাধ্যমে আবারও চলচ্চিত্রে ফিরছেন তিনি।
এ ছবিতে অপির স্বামীর চরিত্রে থাকছেন কলকাতার একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তার নাম ও অন্যান্য অভিনয়শিল্পীর তালিকা শিগগিরই প্রকাশ হবে বলে প্রযোজকরা জানান। যৌথ প্রযোজনার নতুন নীতিমালার আওতায় এই ছবিকেই প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ পরিচালনা করছেন কলকাতার প্রশংসিত নির্মাতা ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। তার সঙ্গে মিলে এটি যৌথভাবে প্রযোজনা করছেন বাংলাদেশি নির্মাতা জসীম আহমেদ। প্রাথমিকভাবে ছবিটির বাংলা নাম রাখা হয়েছে ‘মায়ার জঞ্জাল’। তবে এটি পরিবর্তন করা হবে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেই ছোট গল্পকে একফ্রেমে নিয়ে আসার ব্যাপারে ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী ও জসীম আহমেদ জানান, দুটি আলাদা গল্প। তবে চিত্রনাট্য এমনভাবে সাজানো হয়েছে, শেষে গিয়ে দুটি গল্প মিলে গেছে একই মোহনায়।
যৌথ প্রযোজনার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে ইন্দ্রনীল ও জসীম আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব অনেকদিনের। দুজনেরই প্রধান উৎসাহের বিষয় সিনেমা। ঢাকা ও কলকাতায় চলচ্চিত্র চর্চার ইতিহাস বহু পুরনো। দুই দেশেই চলচ্চিত্র কর্মীদের দক্ষতা ও প্রতিভা প্রশ্নাতীত। তবুও পরীক্ষামূলক বাংলা ছবির পিঠ ক্রমে দেয়ালে ঠেকে যাচ্ছে। সিনেমা হল থেকে সরে যাওয়ার পরে তা ইন্টারনেট বা টেলিভিশনের মাধ্যমে জনপ্রিয় হলেও প্রযোজকরা বিনিয়োগ তুলে আনতে পারছেন না। এককথায় অন্যধারার বাংলা ছবির ব্র্যান্ড পারসেপশন দর্শকের কাছে খুব দুর্বল।’
ইন্দ্রনীল ও জসীম আহমেদ মনে করেন, এই অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার উপায় হলো বাংলা ছবিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কাছে নিয়ে যাওয়া। তারা বলেছেন, ‘এতে দর্শকের কাছে বাংলা ছবির ব্র্যান্ড পারসেপশনে পরিবর্তন আসার পাশাপাশি ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ ছবির একটা আন্তর্জাতিক বাজার খুলে গেলে তার প্রভাব আমাদের দুই বাংলার চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য সুদূরপ্রসারী হবে।’
দুই প্রযোজকের তথ্য অনুযায়ী, ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ ছবির বাজেট সীমিত। তাদের ভাষ্য, ‘আপাতদৃষ্টিতে এই ছবি তথাকথিত মনোরঞ্জনমূলক নয়। তবে আমাদের উদ্দেশ্যের সিকিভাগও সফল হলে তার প্রভাব দুই বাংলার চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য সার্বিকভাবে ইতিবাচক হবে।’
২০১৩ সালে ‘ফড়িং’ ছবির মাধ্যমে পরিচালনায় আসেন ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। এরপর ‘একটি বাঙালি ভূতের গপ্পো’ ও ‘ভালোবাসার শহর’ ছবি দুটি পরিচালনা করেন তিনি। এ দুটিতে ছিলেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী জয়া আহসান।
অন্যদিকে জসীম আহমেদ তিনটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি পরিচালনা করে দেশ-বিদেশে খ্যাতি পেয়েছেন। এগুলো হলো ‘দাগ’, ‘অ্যা পেয়ার অব স্যান্ডেল’ ও ‘চকোলেট’। ‘ওয়ার্ল্ড হোম অব শর্টস মুভিজ’ খ্যাত শর্টস ইন্টারন্যাশনাল তার তিনটি ছবিরই বিশ্ব পরিবেশনার জন্য চুক্তি করেছে।