মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গদের মৃত্যুহার বাড়ছে। তবে দেশটির অশ্বেতাঙ্গদের ক্ষেত্রে এর উল্টো চিত্র দেখা।
সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছর গবেষণার পর তারা জানিয়েছেন, ৪৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের মৃত্যু হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। তবে পৃথিবীর অন্যান্য ধনী রাষ্ট্রগুলোতে এই চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
তারা দাবি করেন, মধ্য বয়সে মৃত্যু হারের দিক থেকে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে আমেরিকান অশ্বেতাঙ্গরা অনেক ভালো অবস্থানে আছেন। আমেরিকা এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মধ্যবয়সী অশ্বেতাঙ্গদের মৃত্যুহার নিম্নমুখী।
আমেরিকায় মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গদের মৃত্যুহার বাড়লেও অন্যান্য ধনী দেশগুলোতে ভিন্ন পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে। গবেষকরা জানান, আমেরিকাতে মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গদের মৃত্যুহার বাড়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে আত্মহত্যা। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্রের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা অনেক বেশি হারে বাড়ছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশকে আমেরিকায় যারা নিয়মিত হেরোইন সেবন করেছে, তাদের ৯০ শতাংশই শ্বেতাঙ্গ।
অন্যদিকে আমেরিকার অধিকাংশ যুবক ও তরুণই বিভিন্নভাবে মাদকাসক্ত। আর দেশটিকে অবৈধ মাদকের দামও অনেক কম। মাদক খুব সহজলভ্য হওয়ায় এর সেবনও অনেক বেশি হয়। নিয়মিত মাদক সেবনের ফলে মানুষ বিষণ্নতায় ভোগে। ফলে তাদের অনেকেই আত্মহত্যা করে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের মধ্যে অনেকেরই শারীরিক ও মানসিকস্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। এছাড়া কাজের ক্ষেত্রেও তাদের উদ্যম কমে যাচ্ছে। তারা খুব বেশি হাটতে পারে না, দশ ধাপের বেশি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পারে না, একটানা দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে পারে না। এসব কারণেও সেখানে আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ছে।
শ্বেতাঙ্গদের মৃত্যুহার বাড়ার দ্বিতীয় কারণ হিসেবে অতিমাত্রায় ওষুধ এবং অ্যালকোহল সেবনকে দায়ী করেছেন ওই গবেষক দল। তারা জানান, ৯০ এর দশক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের মাত্রা অনেকগুণ বেড়েছে।