তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার পর একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসছে। সৌদি যুবরাজের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। এবার সেই ধারাবাহিকতায় সৌদি সম্পৃক্ততার সর্বশেষ প্রমাণ হিসেবে বেরিয়ে এসেছে খাসোগির মরদেহ টুকরো করার ছবি।
ইরাক ও মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে কাজ করা সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট ও স্বাধীন লেখকদের জন্য উন্মুক্ত প্লাটফর্ম আল সুরার একপ্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে তারা মরদেহ টুকরো করার বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত ছবিও প্রকাশ করেছে। এসব ছবি তারা তুরস্কের তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে পেয়েছে বলেও দাবি করেছে।
প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, খাশোগিকে হত্যার পর ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য তার মরদেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছে। তারা দাবি করছে, তুরস্কের তদন্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে তাদের হাতে যে ছবি এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে খাসোগির মরদেহ টুকরো করার দৃশ্য। ছবিতে টুকরো করা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গও দেখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে এখানে একজনের হাতে হাড় কাটা করাতও দেখা যাচ্ছে।
খাসোগি হত্যার প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো হত্যাকাণ্ডের ছবি প্রকাশ হলো। তবে তাদের হাতে থাকা ওই ছবিগুলো এখনও বিশ্বাসযোগ্য কোনো পক্ষকে দিয়ে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ১৫ সদস্যের কিলিং স্কোয়াডকে খাশোগি হত্যার জন্য তুরস্কে পাঠানো হয়। তাদের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল যে, ২ অক্টোবর কনস্যুলেটে যাবেন খাশোগি। তাই পরিকল্পনা মাফিক ওইদিনই তারা কনস্যুলেটে গিয়ে খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে তা নিশ্চিহ্ন করতে এসিডের মাধ্যমে গলিয়ে ফেলে। ১৫ সদস্যের ওই কিলিং স্কোয়াডে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞও ছিল বলেও তুরস্ক দাবি করে আসছে।
খাসোগি নিখোঁজ হওয়ার পর রিয়াদ প্রথমে অস্বীকার করলেও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে খাসোগিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথা স্বীকার করে নেয়। একইসঙ্গে সৌদি কর্তৃপক্ষ খাসোগি হত্যায় জড়িত ১১ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে বিচারেরও প্রতিশ্রুতি দেয়। এদের মধ্যে পাঁচ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ঘোষণা দিলেও যুবরাজ সালমান জড়িত নয় বলে দাবি করে তাকে দোষীদের তালিকায় নেই বলে জানায় দেশটি।
তবে মার্কিন তদন্ত সংস্থা সিআইএ খাশোগি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের পর জানিয়েছে যে, গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে আরো তথ্য পর্যালোচনায় অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানায় তারা।