কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে ক্রেডিট রেটিং করা হয়। কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী রেটিং পদ্ধতি চালু রয়েছে। ব্যাংকের ক্ষেত্রে মুনাফা অর্জনের দক্ষতা, আয় এবং ব্যয়, সম্পদের মান, পর্যাপ্ত মূলধন, তারল্য এবং তহবিল, বিভাগীয় সমন্বয়, আয়ের ভিন্নতা, করপোরেট গভর্ন্যান্স, নিয়ন্ত্রণ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগ ব্যবস্থা বা বিনিয়োগের উপর ভিত্তি করে রেটিং করা হয়। আর আর্থিক ও বীমা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোম্পানির আয়ের সামর্থ্য এবং স্থিতিশীলতা, তহবিল এবং তারল্যের পরিমান, মূলধনীকরণ, সম্পদের মূল্যায়ন, বিভাগীয় সমন্বয়, ম্যানেজম্যান্ট ইভালুয়েশন, করপোরেট গর্ভন্যান্স, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দেখে বিনিয়োগ করা উচিত। রেটিং দেখে সহজেই কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সর্ম্পকে ধারণা পাওয়া যায়। তাই ক্রেডিট রেটিং দেখে একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত বলে তারা জানান।
নিম্নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দীর্ঘমেয়াদী রেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেয়া হলো-
AAA (Tripple A) বলতে অর্থনৈতিকভাবে খুবই মজবুত, সর্বোচ্চ মানের এবং সবচেয়ে কম দায় সম্পন্ন কোম্পানিগুলোকে বোঝানো হয়।
Dauble A- এটা Tripple A থেকে কিছুটা নীচে অবস্থান করে। তবে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট মজবুত। এটিও সর্বোচ্চ মান বজায় রাখে এবং সবচেয়ে কম দায় সম্পন্ন কোম্পানি নির্দেশ করে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি অর্থনৈতিক অবস্থা এবং পরিবেশ পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে।
Tripple B- অর্থনৈতিকভাবে মজবুত হওয়ার মতো সকল গুনাবলী আছে। কিন্তু মাঝারি দায় ঝুঁকি যুক্ত। অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনের প্রভাব এর মধ্যে রয়েছে।
Dauble B- অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো করার মতো গুনাবলী নেই। অর্থাৎ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। মজবুত দায় ঝুঁকি যুক্ত অর্থাৎ এ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রচন্ড ঝুঁকি যুক্ত। একই সঙ্গে ব্যবসা, আর্থিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা অনিশ্চিত।
Single B- অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই দুর্বল এবং উচ্চ দায় ঝুঁকি যুক্ত। বর্তমানে অর্থনৈতিক অঙ্গীকার পূর্ণ করছে। কিন্তু দুর্বল কৌশলের কারণে ব্যবসা, আর্থিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা বাধার সম্মুখীন হতে পারে।
Tripple C- বর্তমানে আক্রমনযোগ্য এবং অর্থনৈতিক অঙ্গীকার পূরণ করতে সুবিধাজনক ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল। খুবই খারাপ বা বাজে বা দুর্বল অবস্থা (আর্থিক) এবং উচ্চ ঝুঁকি যুক্ত দায় রয়েছে এ গ্রুপের কোম্পানিগুলোর।
Double C- খুবই আক্রমনযোগ্য, মুনাফা অর্জনের জন্য স্টক মার্কেট, জায়গা জমির উপর পরিপূর্ণ নির্ভরশীল এবং দেনা পরিশোধে ব্যর্থ।
Single C- যদিও দেনা পরিশোধের অভিজ্ঞতা হয়নি কিন্তু দেউলিয়া হওয়ার মতো অবস্থায় রয়েছে।
D Defult- যদি প্রদত্ত অর্থ বিপদগ্রস্থতার মধ্যে থাকে তবে দেউলিয়া হবার মতো অবস্থায় রয়েছে এ গ্রুপের কোম্পানিগুলোর।
বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর রেটিং করা হয় আয়ের সমতা এবং স্থিতিশীলতা, তারল্য এবং সম্পদ/দায় ব্যাবস্থাপনা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, সম্পদের মান বা মূল্যায়ন, জন্ম মৃত্যুর দায়/ বীমা দায়, করপোরেট গর্ভন্যান্স, বীমা পলিসি নেয়ার আইনগত দায়, মার্কেট পজিশন বা অবস্থান এবং ব্রান্ড বা পার্থক্যকারী বৈশিষ্টাদি ইত্যাদি। আর সাধারণ বীমার ক্ষেত্রে আয়ের ক্ষমতা এবং স্থিতিশীলতা পর্যাপ্ত রিজার্ভ, ম্যানেজমেন্ট এবং করপোরেট গর্ভন্যান্স, বীমা পলিসি নেয়ার আইনগত দায়, ব্যাবসায়িক কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে করা হয়ে থাকে। বীমা কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে-
Triple A বলতে অর্থনৈতিকভাবে খুবই নিরাপদ বোঝায়।
Double A- অর্থনৈতিকভাবে খুব নিরাপদ, এটা Triple A থেকে অল্পএকটু নিচে অবস্থান করছে।
Single A- অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী বা নিরাপদ। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
Triple B- অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ তবে অন্যগুলোর তুলনায় প্রতিকূল ব্যবসা পরিস্থিতি বিরাজমান।
Double B- অর্থনৈতিকভাবে মোটামুটি নিরাপদ। ইতিবাচক গুণাগুণ রয়েছে কিন্তু প্রতিকূল ব্যবসা পরিস্থিতি এটাকে অপ্রতুল অর্থনৈতিক অঙ্গীকারের দিকে ধাবিত করতে পারে।
Simple B- দুবল অর্থনৈতিক নিরাপত্তা। প্রতিকূল ব্যবসা পরিস্থিতি অর্থনৈতিক অঙ্গীকারকে দুর্বল করে দেয়।
Triple C- খুবই দুর্বল অর্থনৈতিক নিপাপত্তা। অর্থনৈতিক অঙ্গীকার পূরনের জন্য সুবিধাজনক (অনুৎপাদনশীল খাত) খাতের ওপর নির্ভরশীল।
Double C- খুবই দুর্বল। অনেক সময় অর্থনৈতিক অঙ্গীকার পূরণ করতে পারেনা।
Single C – দেনা পরিশোধে প্রায় অক্ষম। বর্তমানে অপ্রদত্ত অর্থের জন্য খুবই আক্রমনযোগ্য।
D Defult – যদি প্রদত্ত আয় বিপদগ্রস্থতার মধ্যে থাকে তবে দেউলিয়া হবার মতো অবস্থান দাঁড়ায়।