বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শূন্য পদে স্বাধীনতার পক্ষের ছাত্রদের নিয়োগ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘যোগ্যতা বলে আপনারা ভিসি, প্রো-ভিসি হননি, আওয়ামী লীগ করেন বলেই আজ ভিসি, প্রো-ভিসি হয়েছেন।
বুধবার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের দলীয় টেন্টে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজ এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি- যেখানে যুগে যুগে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে। এখানে শিক্ষার জন্য আন্দোলন করতে প্রাণ দিতে হয়েছে শহীদ শামসুজ্জোহা স্যারকে, হারাতে হয়েছে অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হাত-পায়ের রগ। রাজনীতিতে শেষ বলতে কিছু নেই, তাই অনেক কিছুই দেখতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা পক্ষের লোকদের নিয়োগ দেওয়া হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাবিতে আজ শান্তি বিরাজ করছে শুধু ছাত্রলীগ সজাগ আছে বলে। অথচ স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। বছর দেড়েক আগে চাকরি দিবে বলে প্রশাসনকে আমরা লিস্ট দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই লিস্ট কোথায়? আমরা ইশারা দিলে গদি উঠাতে ২৪ ঘণ্টাও সময় লাগবে না। আমি (লিটন), ডাবলু, ক্যাম্পাস শান্ত রেখেছি। কিন্তু আর কতদিন দেখবো। বিএনপি যদি কোন কিছু তোয়াক্কা না করে একবারে ৫৪৪ জনকে নিয়োগ দিতে পারে, আপনারা কেন স্বাধীনতার পক্ষের ১৪৪ জনকে নিয়োগ দিতে পারেন না।’
চার নেতা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোসতাক আহমেদের সঙ্গে আঁতাত করেনি বলেই তাদের প্রাণ দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দেশে যাতে আওয়ামী লীগকে আর নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ না থাকে তাই ওই চার নেতাকে জেলে হত্যা করা হয়।
শহীদ কামারুজ্জামান সম্পর্কে লিটন বলেন, তিনি গল্পে গল্পে রাজনীতি করেছেন। প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে গিয়ে জনগণের দুঃখের কথা শুনতেন। সেই সঙ্গে যুদ্ধের আগ মুহুর্তে জনগণের মাঝে বঙ্গবন্ধুর বাণী পৌঁছে দিয়ে তাদের যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলেন।
এ সময় তিনি আগামী ২০ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলের সম্মেলন ঘোষণা করেন। এ ছাড়া যে সব হলের সম্মেলন ইতোমধ্যে হয়েছে। অথচ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি, সে সব হলের কমিটি ঘোষণার জন্য রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা ও সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান বিপ্লবকে আহ্বান জানান।
রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান বিপ্লবের সঞ্চালনায় ও রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহনগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য সাইদুল ইসলাম রুবেল, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ইসতিয়াক লিমন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তবীবুর রহমান শেখ, সাবেক সহসভাপতি মীর ইকবাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার প্রমুখ।
এদিকে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।