বাংলাদেশকে নিজেদের সবচেয়ে বড় ‘মটো মার্কেট’ ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে অন ডিমান্ড রাইডশেয়ারিং পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান উবার। প্রতিষ্ঠানটির সবচেয়ে বড় মটো মার্কেটের লিস্টে বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ভারত ও মিসরের অবস্থান।
মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে বাংলাদেশে উবারের যাত্রার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
এ সময় উবার কর্তৃপক্ষ জানান, এ পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি চালক তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, সপ্তাহে আরও প্রায় আড়াই হাজার নতুন চালক সাইন আপ করছেন। এর ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে উবারের কার্যক্রম দক্ষিণ এশিয়ায় কোম্পানিটির মোট প্রবৃদ্ধিতে ২৫ শতাংশ অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে উবারের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রদীপ পরমেশ্বরণ বলেন, গত দুই বছরে চালকদের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি এবং যাত্রীদের জন্য রাইডের ব্যবস্থা করার মাধ্যেমে আমরা উদ্যোক্তা তৈরির সংস্কৃতিকে বাংলাদেশে আরও জোরদার করেছি।যাতায়াতের সময় ও যানজট কমানো এবং বাতাসের গুণগত মান উন্নয়নের মাধ্যমে শহরের যাতায়াত ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পেরে আমরা গর্বিত।আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতিনিয়ত সাহায্য করার জন্য বাংলাদেশ সরকার, আমাদের পথচলার অংশীদার এবং যাত্রী ও চালকদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।
বাংলাদেশে ২য় বর্ষপূর্তিতে উবার এবং এর সব কর্মীকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর সাকিব আল হাসান বলেন, দেশে উবারের প্রথম রাইড নেয়া থেকে শুরু করে সম্প্রতি কোম্পানির ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের জন্য উবারের প্রতিশ্রুতি দেখে আমি অভিভূত। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যুবকদের ক্ষমতায়ন, জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি এবং যাতায়াতে ব্যবস্থার সমাধান দেখে আমি নিজে সৌভাগ্যবান মনে করি। আমি বিশ্বাস করি খুব শিগগিরই এভাবে উবার লাখো বাংলাদেশির মন জয় করতে সক্ষম হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে উবার। বর্তমানে চট্টগ্রামে ৪ ধরনের সার্ভিস চালু রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- উবার এক্স, উবার মটপ, উবার প্রিমিয়ার এবং উবার হায়ার। বাংলাদেশে উবারের যাত্রায় ১ লাখেরও বেশি লোকের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছ।
সাইন আপে সর্বোচ্চ উবার মটো : উবারের তথ্য মতে তাদের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার পার্টনার সাইন আপ করছে। এ বছর সবচেয়ে ব্যস্ততম মাস ছিল অক্টোবর। ঢাকায় প্রতি মিনিটে গড়ে ১৫৫ বার উবার অ্যাপে প্রবেশ করা হয়। বাংলাদেশে যাত্রার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬ কোটি কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে উবার। ঢাকা শহরে ২২ শতাংশ মানুষ অন্তত একবার উবার অ্যাপ ব্যবহার করছে।
গতিতে সেরা উবার মটো : রাজধানীতে গাড়ির চেয়ে ঘণ্টায় ৩ কিলোমিটার বেশি গতি নিয়ে সেরা হয়েছে মটো। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে গতি বেশি।ঢাকায় প্রতি ঘণ্টায় ১৪ কিলোমিটার অতিক্রম করতে পারলেও চট্টগ্রামে গতি ১৬ কিলোমিটার। রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি যাওয়া হয় বিমানবন্দরে, এরপর গুলশান-১ ও বসুন্ধরা সিটিতে। এখন পর্যন্ত ঢাকাতে যাত্রীরা উবার ভ্রমণ করেছেন ১ কোটি ২ লাখ ঘণ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা আরও বলেন, সচলতার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করাই উবারের লক্ষ্য। আপনি কীভাবে বাটনে একচাপে যাতায়াতের জন্য একটি গাড়ি পেতে পারেন? এ সমস্যার সমাধান খুঁজতে আমাদের যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালে। ১০ বিলিয়নেরও বেশি ট্রিপ শেষে এখন আমরা যেসব সার্ভিস তৈরির চেষ্টায় নিয়োজিত আছি সেগুলো একজন মানুষকে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। শহরের যাতায়াত ব্যবস্থা খাদ্য এবং জিনিসপত্র আনা নেয়ার পদ্ধতি পরিবর্তনের মাধ্যমে উবার সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উবার বাংলাদেশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।