গাজীপুরের টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার পর ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের বেশির ভাগ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। পুরো ইজতেমা এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ইজতেমা ফটকে আগত মুসুল্লিদের দাবি, সংঘর্ষের পর দুইজন ছাত্র নিখোঁজ রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গতকালে ইজতেমা ময়দানে আধিপত্য ও নেতৃত্বের কোন্দলসহ দেওবন্দ ও কওমী মাদ্রাসাপন্থী দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর একজন মুসুল্লি মারা যান, আহত হন দুই শতাধিক। এরপর বিকেলে পুরো ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। মাইকিং করে মুসুল্লিদের সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়। তবে তাড়াহুড়ো করে যেসব মুসুল্লি বেডিংপত্র ফেলে ইজতেমা ময়দান ত্যাগ করেছেন আজ তাদের পরিচয় নিশ্চিতের মাধ্যমে মালামাল ফেরত দেয়া হবে। অন্য কোনও মুসুল্লিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ময়দানে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।
এছাড়া দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোনও মামলা হয়নি। তবে পুরো ঘটনা পুলিশের নজদারিতে রয়েছে এবং বাহিনীটি সেটি তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গেইটে অপেক্ষমাণ মুসুল্লিদের দাবি, তাদের বেডিংপত্র ফেরত নিতে এবং নিখোঁজ দুই ছাত্রের সন্ধান পেতে তারা ইজতেমা ময়দানে এসেছেন। পুলিশের অনুমতি পেলে তারা মালপত্র নিয়ে যাবেন।
এদিকে, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বেশির ভাগ রাতেই চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরে গেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ৩৫ জন রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। নিহত ইসমাইল হোসেন মণ্ডলের মরদেহ রাখা হয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে।
ইজতেমা সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিয়ে ছিল মাওলানা জুবায়ের গ্রুপের অনুসারীরা। অন্যদিকে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন ভারতের মাওলানা সাদের অনুসারীরা। শনিবার সকাল ছয়টা থেকেই সাদ গ্রুপের অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন। এসময় ভেতরে প্রবেশে বাঁধা পেয়ে হাজার হাজার সাদ অনুসারী ইজতেমা ময়দানের প্রত্যেকটি প্রবেশ পথে অবস্থান নেয়।
দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে সাদপন্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় ময়দানের ভেতর বেশ কিছু মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়। এতে পুরো ইজতেমা ময়দান রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।