টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরুর পর থেকে এমন একটি দিনেরই স্বপ্ন দেখে এসেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ১১২টি টেস্ট খেলা হয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে জিতেছেও ১২টিতে। কিন্তু টাইগারদের কপালে একটিও ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সৌভাগ্য জোটেনি। বরং, একের পর এক ইনিংস ব্যবধানে হারতেই ছিল অভ্যস্ত।
এবার সেই অধরা স্বাদটিও পেয়ে গেল টাইগাররা। এক সময় যারা ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের একাধিপত্য বিস্তার করে ফেলেছিল, এক সময় যাদের মনে করা হতো- ক্যারিবীয়দের ক্রিকেট সূর্য বুঝি কখনোই অস্ত যাবে না, সেই দেশটিকেই বাংলাদেশ নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ে ফেললো। ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের গৌরবম জয়টি এলো ইনিংস ও ১৮৪ রানের ব্যবধানে।
প্রথম ইনিংসে ৫০৮ রানের পাহাড় গড়ার পর সেই পাহাড়ে চাপা দিতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল বোলারদের জ্বলে ওঠা। স্পিনিং উইকেট। সেখানে বাংলাদেশের চার স্পিনার এক সঙ্গে জ্বলে উঠবেন সেটাই ছিল প্রত্যাশা। যেমনটা হয়েছিল চট্টগ্রাম টেস্টে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে চারজনের সবাইকে প্রয়োজন হয়নি। একা সাকিব-মিরাজই ধস নামিয়ে দিলেন। ১১১ রানে অলআউট করে দিলেন ক্যারিবীয়দের। মিরাজ একাই নিলেন ৭ উইকেট। বাকি ৩টি সাকিবের।
৩৯৭ রানের বিশাল লিড। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দলকে ফলোঅন করাল বাংলাদেশ। ৩৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। শুরু থেকেই সাকিব মিরাজের ঘূর্ণিতে দিশেহারা। এই ইনিংসে একা সাকিব আর মিরাজ সফরকারীদের ওপর হামলে পড়েননি। তাইজুল এবং নাঈমও যোগ দিয়েছেন।
তবুও কাজের কাজটি করে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ইনিংসেও তিনি নিলেন ৫ উইকেট। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়েছেন। বাংলাদেশের জয়ের মূল ভিতটাই রচনা করে দিয়েছেন তিনি। তার ঘূর্ণি ফাঁদে জড়িয়ে একের পর এক উইকেট হারিয়েছেন ক্যারিবীয়রা। দুই ইনিংস মিলে মিরাজ উইকেট নিলেন ১২টি। দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হলো ২১৩ রানে।