দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে ওয়ালটনের রপ্তানি বাজার। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ওয়ালটনের রপ্তানি দেশের তালিকায় নতুন যুক্ত হলো ইয়েমেন। ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এই আরব দেশটিতে ফ্রিজের দুটি শিপমেন্ট পাঠিয়েছে ওয়ালটন। সংশ্লিষ্টদের মতে, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক মান এবং মূল্য প্রতিযোগিতায় অন্যান্য গ্লোবাল ব্র্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকায় ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের সামনে সুদিন রয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের মাঝামাাঝিতে ইয়েমেনের একটি লোকাল ব্র্যান্ডের কাছ থেকে ফ্রিজ রপ্তানির একটি বড় অর্ডার পায় ওয়ালটন। যার শিপমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে গত মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে। এরপর আরেকটি বড় অর্ডার পায় ওয়ালটন। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই দ্বিতীয় শিপমেন্ট পাঠিয়েছে বাংলাদেশী মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড ওয়ালটন।
ওয়ালটনের কর্মকর্তারা জানান, ইয়েমেনে রপ্তানিকৃত ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে, গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের গ্লাস ডোর রেফ্রিজারেটর ও বেভারেজ কুলার। এসব ফ্রিজ রপ্তানি করা হয়েছে ওইএম (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানফ্যাকচারার) পদ্ধতিতে। অর্থাৎ, ইয়েমেনের লোকাল একটি ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের দেয়া ডিজাইন, মান ও অন্যান্য শর্তানুযায়ী ফ্রিজ তৈরি করে দিয়েছে ওয়ালটন।
ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটের প্রধান এডওয়ার্ড কিম বলেন, বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্য ও খুচরা যন্ত্রাংশ রপ্তানির মাধ্যমে ২০২৮ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন। এজন্য বৈশ্বিক অংশীদারদের সর্বোচ্চ গুণগতমানের পণ্য সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়ার পাশাপাশি ওইএম (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানফ্যাকচারার) এর মাধ্যমে বিজনেস ভলিউম বাড়ানোর উপর জোর দেয়া হয়েছে। এ ধরনের নতুন ও উদ্ভাবনী ধারণাই ওয়ালটনকে ধাপে ধাপে বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স বাজারে দ্রুত গ্রাহকপ্রিয়তা পাওয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন বাজার সৃষ্টিতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে ওয়ালটন পণ্যের কয়েকটি বিশেষ দিক। এগুলো হচ্ছে- লেটেস্ট প্রযুক্তির ব্যবহার, গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড, আকর্ষণীয় ডিজাইন ও কালার এবং অন্যান্য গ্লোবাল ব্র্যান্ডের চেয়ে মূল্য প্রতিযোগি সক্ষমতায় এগিয়ে থাকা।
তিনি জানান, ফরমায়েশে উল্লিখিত ডিজাইন ও গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে ফ্রিজ তৈরি ও সরবরাহ করায় এরইমধ্যে ইয়েমেনের ব্যবসায়িক অংশীদারের মন জয় করে নিয়েছে ওয়ালটন। সেই সঙ্গে পাচ্ছে গ্রাহকপ্রিয়তা। তাই, এক মাসের মধ্যেই ওয়ালটনের তৈরি ফ্রিজের দুটি শিপমেন্ট সম্পন্ন হয়েছে।
ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ২০২৮ সালের ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের টার্গেট পূরণে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিট সম্প্রসারণ এবং শক্তিশালী করা হয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোতে নিজস্ব অফিস স্থাপনের পাশাপাশি বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স বাজারের বিপণন বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। গ্লোবাল উন্নয়ন ও গবেষণা এবং ডিজাইন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ওয়ালটন আইবিইউ শাখার অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর রকিবুল ইসলাম জানান, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিজনেস কনফারেন্স ও পণ্য প্রদর্শীতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন। সম্প্রতি চীনের ক্যান্টন ফেয়ার, নাইজেরিয়ার লাগোস ফেয়ার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইলেকট্রনিক্স ফেয়ারসহ জার্মানির চিলভেন্টা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে ওয়ালটন। কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়ান্সের বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মেলা বার্লিনে ‘আইএফএ ফেয়ার’ ও লাস ভেগাসে ‘সিএসই ফেয়ার’ এ অংশ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।