প্রাণিদের মধ্যে জুতা পরার সৌভাগ্যটা হয়েছে কেবল মানুষের। আদিমকাল থেকে চামড়া দিয়ে পদযুগলকে মুড়িয়ে সুরক্ষা দেবার চেষ্টা মানুষের। এরপর চামড়ায় পা ঢেকে রাখার বদলে পায়ে পরার মতো যুৎসই ‘পদ-পোশাক’ বানিয়ে ফেললো মানুষ। যার নাম হলো ‘জুতা’ বা ‘পাদুকা’।
এই কাজটি যারা নিখুঁতভাবে করে দেখাল তাদের নাম হলো চর্মকার। ধুলো-কাদাজনিত চরণলাঞ্ছণা থেকে বাঁচতে ‘জুতা আবিষ্কার’ নামের এক কবিতায় রবীন্দ্রনাথ চর্মকারের কণ্ঠে সুপরামর্শ শুনিয়েছেন: ‘নিজের দুটি চরণ ঢাকো আগে’। এখন আর চর্মকারও লাগে না। জুতা বা পাদুকা তৈরি হয় ফ্যাক্টরিতে।
প্রশ্ন হলো, জুতার প্রয়োজন কি কেবল মানুষের? না, অন্যসব প্রাণিরও, বিশেষ করে গৃহপালিত গবাদি পশুর পায়েরও তো সুরক্ষা দরকার। এদের পায়ের খুরেও তো ক্ষত ও ঘা হয়। এমন ভাবনা ভেবে আসছিলেন কিছু পশুপ্রেমী মানুষ। এবার সে-ভাবনা বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে। রবার্ট টড (৪০) ও মাইক ব্রিম্বল (৪৩) নামের দুই ব্রিটিশ উদ্ভাবক আপাতত গরুর পায়ে পরার উপযোগী জুতা তৈরি করেছেন।
এ-জুতো পরলে বাহ্যিক আঘাত থেকে গরুর খুর রক্ষা পাবে। পাশাপাশি স্যাঁতসেঁতে ভিজে পরিবেশজনিত কারণে গরুর পায়ে ঘা হওয়ার বা জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি আর থাকবে না।
তাদের এই উদ্ভাবিত ‘গরুর পায়ের জুতা’ বাজারে ছাড়ার পর বিক্রিও হচ্ছে ভালো। দেশের বাইরে বিদেশেও ‘গরুর জুতা’র চাহিদা তুঙ্গে। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ৪২টি দেশের বহু জুতা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্ডার পেয়েছেন তারা।
অল্প দিনে এমন সাড়া পেয়ে উদ্ভারক দুজন নিজেরাই অবাক। এতোটা সফলতা আসবে, বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে এতোটা ফিডব্যাক আসবে এমন আশা তারা করেননি।এরই মধ্যে অনেক কোম্পানি তাদের উদ্ভাবিত জুতা তৈরির জন্য লাইসেন্স পেতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইউরোপের সর্ববৃহৎ ভেটেরিনারি ফার্মও এদের মধ্যে আছে।
যেসব গরুর পায়ে এরই মধ্যে ঘা হয়ে গেছে, ৮ সপ্তাহ এই জুতা পরলে ঘা সেরে যাবে। এরকম এক জোড়া জুতার দাম রাখা হচ্ছে সাড়ে তিন পাউন্ডেরও কম।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ