ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮: চলমান নিরাপত্তা হুমকি ইস্যুতে হুয়াওয়ের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে কোম্পানির অবস্থান প্রকাশ করেছেন হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন হু। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) চীনের দোংগুয়ানে কোম্পানির নতুন ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানির অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
কেন হু বলেন, ‘হুয়াওয়েয়ের যন্ত্রাংশের নিরাপত্তা নিয়ে পূর্বের রেকর্ড একদম স্বচ্ছ। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের প্রযুক্তিতে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো গুরুতর অভিযোগ ছিল না বা কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা নিয়ে হুয়াওয়ের অবস্থান অত্যন্ত শক্ত ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।’
প্রযুক্তি দিনদিন জটিলতর হচ্ছে এবং নেটওয়ার্ক উন্মুক্ত হচ্ছে তাই সিকিউরিটি সম্পর্কিত কাজে হুয়াওয়ে এর বিনিয়োগ স্বাভাবতই চলমান রাখবে। এরই ধারাবাহিকতায়, ভবিষ্যতে আরো ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করতে হুয়াওয়ে আগামী ৫ বছরে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এই প্রতিষ্ঠান। কানাডা ও যুক্তরাজ্যের মতো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারকে সহায়তা করতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হুয়াওয়ে ২০১৯ সালের প্রথমার্ধে ব্রাসেলসে একটি সিকিউরিটি সেন্টার চালুর পরিকল্পনা করছে।
হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান কেন্ বলেন আমাদেরকে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন দেশের সরকার, স্থানীয় প্রতিনিধি এবং গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। আমরা এখন এই কাজটিই করছি এবং এই খাতে অন্যদের চেয়ে আমরা অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চাই। কেন হু উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী হুয়াওয়ে সম্পর্কে ভীতি সৃষ্টি করার পরও আমাদের ক্রেতারা আমাদের বিশ্বাস করে এবং আমাদের সাথে কাজ করতে চায়। তাদের সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
তিনি আরো বলেন, হুয়াওয়ের তিনটি বিজনেস গ্রুপ রয়েছে। ২০১৮ সালে তাদের সাথে কাজ করে সব বিভাগও খুব সন্তুষ্ট। চলতি বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তারা। এমনকি কোম্পানিটি ২৫টিরও বেশি ফাইভজি চুক্তি সম্পন্ন করেছে এবং ১০ হাজারের বেশি ফাইভজি বেইজ স্টেশন হস্তান্তর করেছে।
হু জানান, তিনি হুয়াওয়ের সিএফও মেং ওয়ানঝুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করার এখতিয়ার রাখেন না। তবে ব্যবসায়িক কমপ্ল্যায়েন্স পরিপালনে হুয়াওয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী। এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী নির্বাহী কর্মকর্তাদের ভ্রমণে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না।
হু আরো জানান, ‘হুয়াওয়ে কোনো পাবলিক কোম্পানি নয়, তার মানে এটা নয় যে আমরা আমাদের কাজের কোনো স্বচ্ছতা রাখি না। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা অনেক চেষ্টা করি এবং ভবিষ্যতেও করবো। হুয়াওয়ে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যার মালিক এই কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই।’যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ের নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন হু জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় কমিউনিকেশন মার্কেটের মধ্যে অন্যতম। সুতরাং আমরা কখনোই বলতে পারি না, এটা হুয়াওয়ের জন্য কোনো বিষয়ই না। কিন্তু সে দেশের সরকার ব্যবসার প্রক্রিয়াটা কঠিন করে ফেলেছে এবং সুযোগও কমিয়ে এনেছে।’ তবে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ে এবং অন্যান্য চীনা গিয়ারের অনুপস্থিতির কারণে নেটওয়ার্ক সরঞ্জামের ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন যার বিরূপ প্রভাবটা শেষ পর্যন্ত ভোগ করবে গ্রাহকরাই।