বিশ্বব্যাংক প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে ৫০ কোটি ডলার বা প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে । এ জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।
লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডাইরেক্টর ডানড্যান চেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে সুষম খাদ্য এবং উন্নত স্বাস্থ্য ও প্রজনন সেবা দেয়ার মাধ্যমে পারিবারিক পর্যায়ে গবাদি পশুর স্বতন্ত্র উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, সাড়ে ৫ হাজার উৎপাদক সংগঠনকে প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত করার মাধ্যমে ভ্যালু চেইন এবং মার্কেট লিংকেজ উন্নয়ন, নিরাপদ প্রাণিজ উৎপাদন ব্যবস্থা এবং মান নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রর্বতন, টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন, জ্ঞান প্লাটফর্ম ও প্রাণিসম্পদ বীমা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং লজিস্টিক সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের দেয়া এ ঋণ ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (রেয়াত কাল) ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে সরকারকে। এ ক্ষেত্রে উত্তোলিত অর্থের ওপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং ১ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। সব মিলিয়ে সুদের হার হবে ২ শতাংশ।
চুক্তি শেষে মনোয়ার আহমেদ বলেন, এটা কোনো একক প্রকল্প নয়, এটি সার্বিকভাবে প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে সহায়তা দেবে। তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বেড়েছে। তাছাড়া বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন যাতে দ্রুত হয় এজন্য নিয়মিত বৈঠকসহ মনিটরিং করা হচ্ছে। ধীর গতির প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে এবং প্রকল্প তদারকির ক্ষেত্রে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি রয়েছে- যেটির প্রধান হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই।
ডানড্যান চেন বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সার্বিকভাবে প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে প্রকল্পটি। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটির চারটি ধাপ রয়েছে।
এগুলো হল প্রোডাক্টটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট, মার্কেট লিংকেজ অ্যান্ড ভেলু চেইন ডেভেলপমেন্ট, ইমপ্রুভিং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট রিজিলাইনস অব লাইভসস্টক প্রোডাকশন সিস্টেম অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন। প্রকল্পটি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে।
এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩৯৪ কোটি ৬৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। এ প্রকল্পের জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৫০ কোটি ডলার। তবে বর্তমানে প্রকল্পটির জন্য ৪৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার ব্যবহার করা হবে।
সানবিডি/এনজে