নারী অধিকার ও ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এছাড়া দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত, উন্নত ও কল্যাণরাষ্ট্র গঠন ও দ্রব্যমুল্য স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ শতাংশ কমানোর অঙ্গীকার করেছে দলটি।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন দলের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই।
পরে তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ সরকার যেনোতেনো ভাবে ক্ষমতাই থাকতে চাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচন করার মত ফিল্ড নেই। আমি মনে করি, সুষ্ঠু নিবার্চন করার মত এখন পর্যন্ত কোনো পরিবেশ নেই।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই বলেন, ‘আমরা এ দেশে জন্মেছি। এ দেশ আমাদের। নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে বলব, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করতে হবে, এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এটা দেশের মানুষ প্রত্যাশা করে না। এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটা দুঃখ এবং নির্লজ্জ ব্যাপার। ’
দলটি রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন, সার্বিক কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় ধর্ম ও রাজনীতির সমন্বয়, শুধু আইনের শাসন নয়; ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র বিমোচন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, আইন ও বিচার, শান্তি শৃঙ্খলা নিরাপত্তা, গ্রামীণ উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প বাণিজ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, শিশু-কিশোর কল্যাণ, অমুসলিম নাগরিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা, নারী অধিকার ও ক্ষমতায়ন, রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাসহ ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করে।
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত, উন্নত ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করে জনগণকে নানান সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নির্বাচনি ইশতেহারে।
এছাড়া জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলা এবং শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জ্বালানি তেল গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম ৩০ শতাংশ কমানোর অঙ্গীকারও করছে দলটি। তাদের প্রতিশ্রুতিতে বলা হয়েছে মানবিক কারণে রিক্সা ভ্যান ও ঠেলা গাড়ির লাইসেন্স ফি মওকুফ করা হবে। বাস ট্রাক মাইক্রোবাসসহ সকল গণপরিবহনের লাইসেন্স ফি অর্ধেক করা হবে। জমির খাজনা, সকল ধরনের টোল এবং হোল্ডিং ট্যাক্স ৩০ শতাংশ কমানো হবে।
এছাড়া কৃষকের উৎপাদন খরচ পুষিয়ে নেয়ার স্বার্থে সার, সেচ ও বীজ অর্ধেক মূল্যে দেয়া হবে। শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য তাদের বেতন দ্বিগুণ করা হবে। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চিকিৎসা ব্যয় ৫০ শতাংশ কমানো হবে। চলাচলের সহজলভ্যতার জন্য সকল সেক্টরের পরিবহন ভাড়া ৩০ শতাংশ কমানো হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনারত অবস্থায় যাতে পুঁজি সঞ্চয় করে স্বাবলম্বী হতে পারে; এ লক্ষে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্ট সেভিং ব্যাংক (এসএসবি) গঠন করা হবে।
৩০ দফা ইশতেহারে সকল মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জিন ও খাদেমকে সম্মানজনক ভাতা দেয়া ছাড়াও সকল মন্দির ও গির্জাসহ সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সেবককে সম্মানজনক ভাতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আয়কর ও ভ্যাট কমানো ছাড়াও আমদানি – রফতানি শুল্ক ৩০ শতাংশ কমানো ও সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ২৫ শতাংশ বাড়ানোর অঙ্গীকারও আছে ইশতেহারে।