“মমতাই ভারতের সবচেয়ে সৎ ও পরিচ্ছন্ন নেতা”

আপডেট: ২০১৫-১১-০৬ ১৪:০৪:২৬


12_89668পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূয়সী প্রশংসা করলেন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি ইউয়ান চাও। সফর শেষ করে যাওয়ার সময় বললেন, চিনের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় ভরতের সবচেয়ে সৎ রাজনীতিক হচ্ছেন মমতা। চীনা ভাইস প্রেসিডেন্টের এই প্রশংসা অবশ্য বাম রাজনীতিকদের বুকে শেল ছোঁড়ার মতোই-বললেন এক বাম নেতা। শুধু তাই নয় মমতাকে চীন সফরের আমন্ত্রণকেও ভালো চোখে দেখছে না পশ্চিমবঙ্গের বাম নেতারা। তারা বলছেন, তা-ও আবার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউ টাউনের ইকো পার্কের গ্লাস হাউসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন চিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাতে যোগ দেন চীনের বিদেশ, সামাজিক সুরক্ষা, বাণিজ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের চার উপমন্ত্রীও। রাজ্যের তরফে ছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিত্‍ কর পুরকায়স্থ। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের অমিতবাবু বলেন, ‘বৈঠকে একটা বড় ব্যাপার ঘটেছে। চিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাদের জানালেন যে, তাঁরা ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর একটি সমীক্ষা করেছেন। সেই অনুযায়ী ভারতের সবচেয়ে সৎ ও পরিচ্ছন্ন নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও লাগাতার সংগ্রাম চালিয়েছেন। এমনকি, পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কেও যে চিনা নেতৃত্ব পুরোমাত্রায় সচেতন, সেটাও তিনি জানিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে কি ভাবছেন মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘যাঁরা এসেছেন, তাঁরা অমিতবাবুকে কী বলছেন জানি না। ফলে, আন্দাজের ভিত্তিতে কোনও মন্তব্য করা ঠিক নয়। তাই এই নিয়ে কিছু বলছি না।’

এদিন চিনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের সুর যে সামগ্রিক ভাবে ইতিবাচকই ছিল, তার ইঙ্গিত মিলেছে সাংবাদিক বৈঠকে মমতার মন্তব্যেও। তিনি বলেন, ‘ওঁরা আমাকে চীনে যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন। প্রস্তাবিত বাস কারখানায় ইতিমধ্যেই চিনের তরফে ১১ শতাংশ বিনিয়োগ হয়েছে। বছরে দেড় হাজার বাস তৈরি হবে। অটো হাব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। পাশাপাশি, পর্যটনের বিকাশে আলোচনা হয়েছে। চীনা প্রতিনিধিরা হিউয়েন সাঙের কথাও উল্লেখ করেছেন। দু’তরফে ঐতিহাসিক যোগসূত্র তো রয়েছেই। রাজ্যে উন্নয়নমূলক নানা প্রকল্পে চীনা সরকারের এশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাঙ্কের থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। এতে আমরাও আগ্রহী।

পশ্চিমবঙ্গ এক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করতে চলেছে। চিনের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের কলাভবন-সহ রাজ্যের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষাগত যোগ রয়েছে, তার সূত্র ধরে শিক্ষা হাবের বিকাশের কথাও বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ-মায়ানমার-চীন অর্থনৈতিক করিডোরের বিকাশে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে বারবার। পুজোর সময় চিনা পর্যটকরা যাতে কলকাতায় আসেন, সেই অনুরোধও করেছি।’ এই ব্যাপারে মুখ্যসচিব জানান, প্রাথমিক ভাবে এক হাজার চিনা পর্যটকের জন্য বিশেষ পুজো প্যাকেজ বানাতে চায় রাজ্য।

সানবিডি/ঢাকা/রাআ