কাঁচাবাজার মানেই এখন শীতের সবজির পসরা। শীতকালীন প্রায় সব সবজি এসে গেছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। প্রতিদিনই সরবরাহ বাড়ছে। যদিও সেই অনুপাতে কমছে না দাম। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে দাম কমতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে আসছে টমেটো, শিম, ফুলকপির মতো সবজির দাম। এদিকে গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। শুক্রবার তা আবার কমে এসেছে।
শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শীতকালীন সবজিতে ভরপুর দোকানগুলো। ক্রেতা আসলেই জোর করে সবজিতে ব্যাগ ভরে দিতে চাচ্ছেন বিক্রেতারা। ৬০ টাকা দাম চেয়ে পরে ৪০ টাকাতেও দিতে রাজি হচ্ছেন তারা। এ দৃশ্য দেখেই বোঝা যায়- ৬০ টাকার সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। তবে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বলছেন, যে হারে সবজি এসেছে দাম সেই হারে কমেনি। তবে ধীর গতিতে হলেও দাম কমে আসায় খুসি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই।
শুক্রবার বাজারে শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা বরবটি ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা, কাকরোল ৪০-৫০ টাকা, পটোল ৪০-৪৫ টাকা, মূলা ৩০-৪০, করলা ৫০-৬০ টাকা, কচুর লতি ও কচুমুখি ৪০-৫০, শসা ৩০-৪০, পেঁপে ২০-২৫ টাকা এবং আলু ২৬-২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে। প্রতিকেজি কাঁচামরিচের দাম নেয়া হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। এছাড়া পুইশাকের প্রতি আটি ২০-২৫ টাকা, পালং শাক ১০-১৫ টাকা, লাউ শাক ২৫-৩০ টাকা, লাল শাক ১০-১২, মুলা শাক ৮-১০, কলমি শাক ১০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৪০-৫০ টাকা, ফুলকপি ২৫-৩০ টাকা, বাধাকপি ৩০-৩৫ টাকা, কাঁচাকলার হালি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম আগের মতো থাকলেও আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানিকৃত এক কেজি পেয়াজের দাম নেয়া হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এদিকে চীনা রসুনের দাম আবার কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় আর দেশিটার দাম ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক কেজি আদার দাম নেয়া হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা।
এদিকে হঠাত্ করেই গত সপ্তাহে বেড়েছিল ব্রয়লার মুরগির দাম। ১১৫ থেকে ১২০ টাকা থেকে বেড়ে গত সপ্তাহে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল এটি। শুক্রবার তা আবারো কিছুটা কমে বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি দরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের আমেজে বিয়ে-সাদী, পিকনিকসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের পরিমাণ বেড়ে গেছে। এতে মুরগির ওপর বাড়তি চাপ রয়েছে। এতে দাম কিছুটা ওঠা-নামা করছে। তবে ভরা শীতে দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানা তারা। কারণ, শীতে মুরগির নানা রোগ-বালাই হয় বলে উত্পাদন কমে দেন খামারিরা। তবে ডিমের দাম আগের মতোই রয়েছে। খামারের লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা হালি দরে। গরুর মাংস ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসীর মাংস ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে তেমন কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। প্রতিকেজি মাঝারি রুই ২০০ থেকে ২৮০ টাকা, বড় দেশি রুই ৩৫০ থেকে ৪৫০, আমদানি করা বড় রুই ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, চাষের কৈ ১৮০-২৫০ টাকা, ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া ৮০০-১০০০ টাকা এবং ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়ার দাম নেয়া হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকা।
এছাড়া ভোজ্যতেল, চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, গুড়াদুধসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামেও তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।