একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বেচাকেনায় স্থবিরতা এখনো কাটেনি।নির্বাচনের আগে থেকেই ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো।এর মধ্যে ২০১৮ পেরিয়ে ২০১৯ সাল শুরু হয়েছে। কিন্তু তারপরেও বাজারের পরিস্থিতি এখনো অনেকটা ক্রেতাশূন্য রয়ে গেছে।সাথে সাথে আর্থিক লেনদেনও কমে গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, জাতীয় নির্বাচনের আগে এক-দেড় সপ্তাহ ধরে খাতুনগঞ্জে ক্রেতা কমতে শুরু করে। ফলে এ সময় বেচাকেনা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অর্ধেকে নেমে আসে। তবে নির্বাচনের পর বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসার আশা করেছিলেন তারা। বাস্তবে এ আশার প্রতিফলন ঘটেনি। নতুন বছরে এসেও খাতুনগঞ্জে ক্রেতাসমাগম তুলনামূলক কম রয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে প্রাত্যহিক বেচাকেনায়।
স্থানীয় কাঁচা পণ্য ব্যবসায়ী জুয়েল বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ে আগে প্রতিদিন ৪০-৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আসত। তবে বেচাকেনা কম থাকায় পণ্যটির সরবরাহ কমে গেছে। চলতি বছরের শুরুতে সাকল্যে পাঁচ থেকে সাত ট্রাক পেঁয়াজ সরবরাহ হয়েছে। আলাপকালে তিনি বলেন, খাতুনগঞ্জে আমাদের আড়তে প্রতিদিন ২০-৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়। তবে দেড়-দুই সপ্তাহ ধরে দৈনিক ১০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও আসাদগঞ্জ মিলে বৃহত্তর খাতুনগঞ্জে প্রতিদিন দেড়-দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়। কিন্তু নির্বাচন ঘিরে দেড়-দুই সপ্তাহ ধরে এ বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে। নতুন বছর শুরু হলেও ক্রেতারা বাজারমুখী হননি। এটা দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারে বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
স্থানীয় হামিদুল্লাহ মার্কেট কাঁচা পণ্য ব্যবসায়ী সমিতি জানাচ্ছে, অন্যান্য সময়ে এ মার্কেটে প্রতিদিন ৩০-৪০ কোটি টাকার কাঁচা পণ্যের বেচাকেনা হয়। তবে জাতীয় নির্বাচন ও লম্বা ছুটির ফাঁদে এর পরিমাণ দৈনিক ১০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। নির্বাচনের পর নতুন বছরেও ক্রেতাশূন্য অবস্থা বজায় থাকায় বেচাকেনায় স্থবিরতা চলছে।
বছরের শেষে এসে টানা চারদিন ব্যাংক বন্ধ ছিল। ১ জানুয়ারি থেকে ব্যাংকের লেনদেন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে বছরের প্রথম দিন খাতুনগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের শাখাগুলোয় লোকসমাগম ছিল আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় কম।