মিয়ানমারে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সাধারণ নির্বাচনে আজ রোববার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
এ নির্বাচন উপলক্ষে দেশব্যাপী নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রায় ৪০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ২৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম দেশটিতে এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে। এতে ৯০ টির বেশি দল থেকে ৬ হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভোটারের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। কাল সোমবার সকাল নাগাদ নির্বাচনের ফল পাওয়া যেতে পারে।
২০১০ সালের নির্বাচনে রোহিঙ্গারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু এ বছর অস্থায়ী পরিচয়পত্রধারী প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা ভোট দিতে পারছেন না। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। কিন্তু এবার দলটি জোরালো প্রচার চালায়নি। তাই তারা ভিন্ন উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে থেইন সেইন বলেছেন, নির্বাচনের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, সরকার ও সেনাবাহিনী তা মেনে নেবে। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার পালাবদল নিশ্চিত করতে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এ নির্বাচনে বড় সাফল্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এনএলডি বিজয়ী হলেও সু
চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। কারণ, কারও সন্তান বিদেশি নাগরিক হলে মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী তাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ নেই।
তবে সু চি গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, এনএলডি সরকার গঠন করলে ক্ষমতার রাশ তাঁর হাতেই থাকবে।
মিয়ানমারে প্রায় ৫০ বছর সামরিক জান্তা ক্ষমতায় ছিল। ২০১১ সালে সেনা-সমর্থিত বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় এসে বেশ কিছু সংস্কারকাজ শুরু করে। তবে দেশটির বর্তমান সংবিধান সেনাশাসকদেরই তৈরি। তাঁরা দেশটির পার্লামেন্ট ও সরকারের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার সব সুযোগ রেখেছেন। আজকের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলেও তা পার্লামেন্টের ৭৫ শতাংশ আসনের প্রতিনিধি চূড়ান্ত করবে। বাকি ২৫ শতাংশ আসন অনির্বাচিত সেনা কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। তাই যে দলই ক্ষমতায় আসুক, সেনাবাহিনীর আধিপত্য কমার সুযোগ কম।