পুঁজিবাজারে আসার অপেক্ষায় থাকা ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম বলেছেন, আগামী ১০ বছরে ৭০ বছরের পুরোনো কোম্পানির জায়গা দখল করতে চাই। এই জন্য প্রয়োজন সবার সহযোগীতা। সবার সহযোগীতা পেলে আগামী ১০ বছরে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় প্রথম দিকে স্থান করে নিবে ওয়ালটন।
প্রথমমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসার অংশ হিসেবে আয়োজিত রোড শো অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটনের করপোরেট অফিসের সম্মেলন কক্ষে এই রোড শো অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এসএম নূরুল আলম রেজভী, পরিচালক এসএম মাহবুবুল আলম, স্বতন্ত্র পরিচালক এম ফরহাদ হোসেইন, এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান খাজা আরিফ,প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ তাবারক হোসেন ভুঁইয়া।
আশরাফুল আলম বলেন, শুরু দিকে যে সময় আমরা বলতাম ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের বাজারে আমরা নাম্বার ওয়ান হবো, তখন সবাই হাসতো। আজকে তা বাস্তবতা। এখন বলছি আগামী ১০ বছরে বিশ্বের সেরা কোম্পানিগুলোর একটি হবে ওয়ালটন। এই জন্য রিসার্স, বিপন সবদিকে নজর দিয়েছে ওয়ালটন। সবার সহযোগীতা নিয়ে আগামী ১০ বছরে ওয়ালটন বিশের সেরাদের প্রথম দিকে থাকতে চায়। সবাইকে নিয়ে এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই আমরা।
তিনি বলেন, ওয়ালাটন টাকার জন্য শেয়ারবাজারে আসছে না। বাজারে আসছি কোম্পানিকে বছরের পর বছর টিকিয়ে রাখার জন্য। আমরা বাজার থেকে যে টাকা তুলতে চাই, সেই টাকা আমাদের একজন মার্কেটিং ম্যানেজারই তুলে দিতে পারে।তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে কম্প্রেসার তৈরিতে সাউথ এশিয়ায় সপ্তম, এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছি।
শেয়ারবাজার নিয়ে আমাদের এক ধরণের ভিতি আছে উল্লেখ করে আশরাফুল আলম বলেন, আমরা আমাদের কাজ করে যেতে চাই। আমরা শেয়ারবাজার নিয়ে খেলতে চাই না। আমাদেরকে নিয়ে কেউ খেলবেন না। একই সঙ্গে বলতে চাই আমরা ইপিএস নিয়ে কখনো কারসাজি করবো না। তবে এতুটুকু বলতে পারি আমাদের শেয়ার কিনে বঞ্চিত হবেন না। আমরা প্রতিবছরই সেরা ভ্যাট দাতা নির্বাচিত হই। ভ্যাট কখনও ইচ্ছে করে বেশি বা কম দেই না। বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও মুনাফা কম বেশি করা হবে না নিশ্চিত থাকুন।
তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসার কিছু রিস্ক আছে। এটি হলো ওয়ালটন এসি, রেফ্রিজারেটর তৈরী করে। ফলে শীতে আমাদের পন্যের জন্য বড় সমস্যা। এসি এবং রেফ্রিজারেটর শীতে কাহিল হওয়ার পন্য। সুতরাং এ সময় পন্য বিক্রি কিছুটা কম হয়। আর এটাই ওয়ালটনের রিস্ক ফ্যাক্টর। এটি কমাতে ওয়ালটন প্রায় ৩০ টি পন্য নিয়ে কাজ করছে। এসি, ফ্রিজ শীতকালে বিক্রি কম হলেও অন্যান্য পন্যের বিক্রি স্বাভাবিক থাকবে। যা মুনাফা অর্জনে ভূমিকা রাখছে বলে জানান তিনি।
কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। উত্তোলিত এ অর্থ ওয়ালটনের কারখানার সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন, গবেষণা ও মানউন্নয়ন, ব্যাংক লোনের আংশিক দায় পরিশোধ এবং আইপিও খরচ মেটাতে খাতে ব্যয় করা হবে।
চলতি হিসাববছরের (২০১৮-১৯) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০১৮) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১০ টাকা ৫৯ পয়সা এবং শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২০৮ টাকা। কোম্পানির পুঞ্জিভূত মুনাফা ২ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা এবং শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ১৭ টাকা ২০ পয়সা।
এএএ ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে এবং প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডকে রেজিস্টার টু দ্য ইস্যু হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।