বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে প্রবৃদ্ধি হবে বাড়তি নির্মাণ খরচ
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৯-০১-২৯ ১২:৪৮:৪৪
মুদ্রাস্ফীতি ও সম্ভাব্য মুদ্রার মান হ্রাস নিয়ে অবকাঠামো খাতের অংশীদারদের উদ্বেগ সত্ত্বেও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) বাংলাদেশকে একটি গুরূত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে অগ্রাধিকার দিয়ে যাবে।
এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স (এআইএফ) এর রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমান বাজার অনিশ্চয়তা এবং চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ সহ এশিয়া জুড়ে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ্য অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে আগামী ১২ মাসে প্রতিযোগিতামূলক দেশীয় অর্থায়ন পরিবেশের কারণে অবকাঠামোগত ঋণ ব্যয় হ্রাস পাবে। দীর্ঘমেয়াদী ঋণগ্রহীতাদের বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আর্থিক খাত শক্তিশালী হওয়ায় ঋণ প্রদানের হার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুদ্রা অস্থিতিশীলতায় প্রকল্প অর্থায়ন প্রভাবিত হতে পারে, যদিও বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকগুলো যেকোনো প্রতিবন্ধক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এআইআইবি এর পলিসি অ্যান্ড স্ট্রাটেজি ভাইস প্রেসিডেন্ট জোয়াচিম ভন আমসবার্গ বলেন,‘বাংলাদেশ একটি দ্রূত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং বিদ্যমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধারায় অবকাঠামো খাতের ঘাতটি মোকাবিলার এখনই সুযোগ।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আর্থিকভাবে ফলপ্রসু এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব রাখতে সব অবকাঠামোগত প্রকল্প চিহ্নিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
এআইআইবি বর্তমানে পরিবহন, জ্বালানী, এবং পানি উন্নয়ন খাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প পর্যলোচনা করছে। এ প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ময়মনসিংহ কেওয়াটখালি ব্রীজ প্রকল্প এবং সিলেট-তামাবিল সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। এআইআইবি বোর্ড অব ডিরেক্টরস এখন পর্যন্ত জ্বালানি খাতের তিনটি প্রকল্পের জন্য ২৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে।
সরকার ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। সদস্যদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তার জন্য এআইআইবি কৌশল প্রণয়ন করছে।
এআইআইবি এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জ্যাং পিং থিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নির্মাণ ব্যয় এবং প্রকল্প বাস্ধসঢ়;তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নতি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করবে।’
এআইআইবি সম্পর্কেঃ
দ্য এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) একটি বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় বেইজিং এ অবস্থিত। ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটির বিশ্বব্যাপী বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৯৩। এশিয়া অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কাজ করছে ব্যাংকটি। এছাড়াও এশিয়া অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে
জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরি একটা বড় লক্ষ্য। ব্যাংকটি মনে করে মানুষ, সেবা ও বাজার ব্যবস্থার একটি গভীর সংমিশ্রন শত কোটি মানুষের জীবনে বড় প্রভাব রাখার পাশাপাশি একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ উপহার দেবে।
এআইএফ সম্পর্কেঃ
এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিনান্স রিপোর্টের ফিচারগুলো বিভিন্ন খাতের ৪০ জন বিশেষজ্ঞ লেখক লিখেছেন। লেখকরা সকলেই ব্যাংকিং, প্রকল্প ও অবকাঠামো, আর্থিক সেবা, বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংক, জ্বালানী ও পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞ। এই রিপোর্টে অবকাঠামোর আর্থিক পরিধি, অবকাঠামোর আর্থিক খরচ, ও সড়ক নির্মাণ খরচ এই তিনটি বিষয়কে বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখানো হয়েছে। এই তিনটি বিষয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপিনস, রাশিয়া এবং তুরস্কের মত দেশগুলোতে প্রকল্প অর্থায়নের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।