বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার উদ্যোগে এবং রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সহযোগিতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে । রোববার সকাল ১০টা থেকে পরিবেশ বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের কনফারেন্স কক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন।
এসময় তিনি প্রবন্ধে বাংলাদেশের শতকরা ১৭ জন মানুষ ক্ষুধা-অপুষ্টির শিকার বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০১৫ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বর্তমান বিশ্বের ৭৯ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পায় না। এদের মধ্যে ২৮ কোটি ১৪ লক্ষের বাস দক্ষিণ এশিয়ায়। এর মধ্যে বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৬.৮ জন ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার। যেখানে ভারতে ১৭.৫%, শ্রীলঙ্কায় ১৪ %, মালদ্বীপে ৫.৬%, পাকিস্থানে ১৯.৯% এবং নেপালে ১৮%। দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষুধা ও অপুষ্টির চ্যালেঞ্জটি জটিল ও বহুমাত্রিক।’
তিনি আরো বলেন, ‘ধান, গম, আলু, ডাল, সবজিসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য মোট ক্যালরি ও প্রোটিনের প্রায় ৮০ শতাংশের যোগান দিয়ে থাকে। কিন্তু উৎপাদন বেশি হলেও মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কম থাকায় মানুষ এসব খাদ্যশস্য খেতে পায় না। তাই যতটুকু সম্ভব ধান ও গমই এই ক্যালরি ও প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এর মধ্যে ক্যালরিতে ধানের অবদান ৭৪ শতাংশ। এবং প্রোটিনে চাল ও গমের অবদান ৫৭ শতাংশ। ফলে মানুষকে অপুষ্টির শিকার হতে হচ্ছে।’
তিনি তার প্রবন্ধে বাংলাদেশের খাদ্য সমস্যা সমাধানে কয়েকটি সুপারিশ করেন। সেগুলো হলোÑঅভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও আমদানির মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহের লভ্যতা বাড়ানো, সরকারী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি সম্প্রসারণের মাধ্যমে খাদ্যে প্রবেশগম্যতা বাড়ানো এবং খাদ্য ব্যবহারে কার্যকারিতা বাড়ানো।
এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টাস ইউনিটির (রুরু) সভাপতি শামীম রহমান বলেন, ‘খাদ্য মানুষের মৌল মানবিক অধিকার হলেও প্রায় এক কোটি মানুষকে ক্ষুধা ও পুষ্টিহীনতায় ভুগতে হচ্ছে। অথচ পৃথিবীতে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন করা হচ্ছে তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপচয় করা হচ্ছে। যা দিয়ে বিশাল একটা অংশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেতো। বন্যা, খরা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ আমাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনও তৃণমূল পর্যায়ের খাদ্য অধিকারকে সংকটে ফেলে দিচ্ছে।’
সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান, আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদেকুল ইসলাম, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার পরিচালক ফয়জুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/এসএস