পায়ে কলম ধরে এসএসসি পরীক্ষা জসিমের। জন্ম থেকেই দুটি হাত না থাকায় ‘পা দিয়ে লিখে’ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে প্রতিবন্ধী জসিম। পা দিয়েই স্বপ্ন জয় করার চেষ্টা তার।
জসিম ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের উত্তরপাড়ার দরিদ্র কৃষক হানিফ মাতুব্বরের ছেলে। চার ভাই এক বোনের মধ্যে বড় সে।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার মনোহরপুর এমএ শাকুর মহিলা কলেজ ভেন্যুতে পরীক্ষা দিচ্ছে জসিম। সে উপজেলার তালমা নাজিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী।
মানুষের মত মানুষ হওয়ার দুর্বার বাসনায়, শত বাধা উপেক্ষা করে অসম্ভবকে সম্ভব করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সংগ্রাম করে এ পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে জসিম।
জন্ম থেকেই দুটি হাত না থাকায়, জসিমের পায়ের আঙ্গুলের মধ্যে চক ও পেন্সিল দিয়ে একটু একটু করে লেখার অভ্যাস শুরু করা হয়।
মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই পা দিয়ে লেখার অভ্যাস পুরোপুরি আয়ত্ত করে ফেলে সে। বাবা মায়ের আগ্রহ আর শিক্ষকদের আন্তরিকতায় জসিম সব বাধা ঝেড়ে ফেলেছে।
জসিম লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাড়াতে চায়, মানুষের মত মানুষ হতে চায়। বড় হয়ে সে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চায়। প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয় এটা সে প্রমাণ করতে চায়।
জসিমের বাবা হানিফ মাতুব্বর বলেন, শত কষ্ট ও অভাবের মধ্যেও আমি সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছি। আমি চাই ওরা মানুষের মতো মানুষ হোক।
তাই চার ছেলে ও এক মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছি। অর্থের কারণে ওদের লেখাপড়া করাতে আমার খুবই কষ্ট হয়। তারপরও যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।
জসিম জানায়, জন্ম থেকেই আমার দুটি হাত নেই, পা দুটি বাকা। প্রথমে কেউ ভাবেনি আমার পক্ষে লেখাপড়া করা সম্ভব হবে। তবে আমার বাবা-মায়ের আগ্রহ আর শিক্ষকদের সহযোগিতায় তা সম্ভব হচ্ছে।
আমি লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইকবাল হাসান বলেন, জসিম যেন ভালোভাবে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারে, সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।