ব্যাংকিং খাতে এখন প্রধান সমস্যা হচ্ছে খেলাপি ঋণ। ঋণগ্রহীতাদের এক শতাংশ বেশি সুদ দিতে হচ্ছে এই খেলাপি ঋণের কারণে । এজন্য সুদহার কমাতে হলে নন পারফরমিং লোন (এনপিএল) বা খেলাপি ঋণ কমানোর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিস (ডিসিসিআই)।
বুধবার ২০ ফেব্রুয়ারী রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআইয়ের ২০১৯ সালের বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি ওসামা তাসীর, সিনিয়র সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ ও পর্ষদের পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ব্যবসা সহজীকরণ, বিনিয়োগ, অবোকাঠামোগত উন্নয়ন, রফতানি বহুমুখীকরণ, কর ও ভ্যাটের কাঠামোগত সংস্কার, ব্যাংক খাত সংস্কার, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রস্ততি ও গবেষণার বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
ডিসিসিআইয়ের সভাপতি ওসামা তাসীর বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামানোর কোনো বিকল্প নেই। এ নিয়ে ব্যাংকগুলোর ওপর সরকারের একটি নৈতিক চাপও আছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো বলছে- এনপিএলের কারণে সুদহার কমাতে পারছে না তারা। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ বাড়ানোসহ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ব্যাংক খাতের সংস্কার জরুরি।
ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে ব্যাংক খাত সংস্কারের ৬টি দাবি উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী সিঙ্গেল ডিজিটে সুদহার নামিয়ে আনা, বাণিজ্য খাতে ঋণ সমন্বয় করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বাড়াতে সরকারের নীতি বাস্তবায়নে সহায়তা করা, স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠন, বড় ঋণ পর্যবেক্ষণ করা, খেলাপি ঋণ কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সরকারি ব্যাংকের সুশাসন নিশ্চিত করা।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা বলে আসছে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে । একই অবস্থানে আছে ঢাকা চেম্বারও।
শীর্ষ ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে কি না বা থাকলে নেয়া হবে কি না- জানতে চাইলে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি জানান, সংগঠনের পক্ষ থেকে শীর্ষ ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। তবে তাদের নৈতিক চাপ দেয়া যেতে পারে।
ব্যবসায় সহজীকরণ সূচকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে উল্লেখ করে ওসামা তাসীর বলেন, এ সূচকে উন্নতি করতে হলে বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস দ্রুত চালু করতে হবে। একই সঙ্গে ছোট উদ্যোক্তাদের এ সেবা প্রদানে ঢাকা চেম্বারে একটি শাখা খোলার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগ বাড়াতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পূর্ণ একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি বন্ড ছাড়ার দাবি করা হয়।
ডিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কর্পোরেট করহার সবচেয়ে বেশি। এটি কমাতে হবে। এছাড়া নতুন ভ্যাট আইনে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ ভ্যাট রাখার প্রস্তাব করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন ব্যাংক অনুমদনে কী প্রভাব ফেলবে- জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এটি সময় বলে দেবে ভালো হবে না কি মন্দ হবে। এখনই বলা মুশকিল।