লালমনিরহাটের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা বিভিন্ন রকমের রবিশস্য আবাদ করে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভুট্টা আবাদ, এই শস্যটি সম্প্রতি এ অঞ্চলের ব্র্যান্ডিং পণ্য বলে খ্যাত।
এ অঞ্চলের কৃষকরা চলতি মৌসুমেও রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। এবছর তারা বিগত ২০১০ সালের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন ।বিশেষভাবে লালমনিরহাট, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ করেছেন তারা।
২০১০-২০১১ অর্থবছরে লালমনিরহাটে ১৮ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছিল। আর ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ভুট্টা আবাদের জমির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। চলতি অর্থবছরে ভুট্টা চাষের জমির পরিমাণ আরও প্রায় দুই হাজার হেক্টর বেড়েছে। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কালিগঞ্জ থেকে পাটগ্রাম পর্যন্ত মাইলের পর মাইল বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভুট্টা আবাদ করা হয়েছে।
আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে লালমনিরহাটে প্রায় ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। এটা এ অঞ্চলের মোট ফসলাধীন জমির প্রায় ১৬ ভাগ।
লালমনিরহাটে এ বছর ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় তিন লাখ টন। গত মৌসুমে এ অঞ্চল থেকে প্রায় দুই লাখ ৮২ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদিত হয়। হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ভুট্টা চাষ করা কৃষক লাকু মিয়া (৪৭) জানান, কৃষি বিভাগের সহায়তায় উন্নতজাতের বীজ আবাদের ফলে আগের চেয়ে ভুট্টার ফলন এখন প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে প্রতি একর জমি থেকে প্রায় ১০০-১৪০ মণ ভুট্টা পাওয়া যায় এবং এর জন্য খরচ পড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা। একরপ্রতি খরচ বাদে লাভ থাকে ৩৫-৪০ হাজার টাকা।