নিজের মাকে ভোট না দেয়ার কারণ উল্লেখ করেই তিনি মালায়াম ভাষায় ফেসবুকে ওই চিঠি পোস্ট করেন। এটি পরে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দা নিউজ মিনিট’ ইংরেজিতে অনুবাদ করে প্রকাশ করে। চিঠিতে তিনি লিখেছেন,‘আমি গর্বিত যে মায়ের ভালোবাসা আমাকে আমার দেশাত্মবোধ থেকে বিচ্যূত করতে পারেনি। যদিও নির্বাচনে আমার মায়ের পরাজয় ছেলে হিসেবে আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আমি আমার দেশের ১২৬ কোটি মানুষের কল্যানের কথা ভেবেই তাকে ভোট দিতে পারিনি।’
বিজেপি বিদ্বেষের কারণ হিসেবে রাজেশ তার চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং জাতিগত বৈষম্যসহ নানা উপষঙ্গ তুলে ধরেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে মোদি নানাভাবে জাতিগত এবং ধর্মীয় বৈষম্যকে লালন করেছেন। যে কারণে মোদির ১৫ বছরের শাসনকালে শিক্ষায় ভারতের ২৯টি রাজ্যের মধ্যে গুজরাটের অবস্থান ছিল ২৮। ওই রাজ্যের পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থাও যা ইচ্ছে তাই। এখানকার সিংহ ভাগ মানুষই প্রকাশ্যে মলত্যাগ করে। ফলে গুজরাট জুড়ে একটি পরিচ্ছন্ন শহর খুঁজে পাওয়া যাবে না। উপরন্তু বিজেপি’র অঙ্গ সংগঠন রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘের প্রধান মোহন ভগবতের করা এক সাম্প্রদায়িক উক্তি নিয়েও রাজেশ কুমারের ক্ষোভ ছিল। মোহন ভগবত উচ্চবর্নের হিন্দুদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন,‘শীঘ্রই কোটা সংরক্ষণ ব্যবস্থা ফিরে আসছে এবং পুরনো দাসরা আবার ফিরে আসবে।’ একই সময়ে মোদিও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের কোটা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
চিঠির শেষে ওই পুলিশ কনস্টেবল লিখেছেন,‘আমরা আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য একটি আধুনিক ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে চলেছি, যে সমাজ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ এবং ধর্মীয় চরমপন্থা বিবর্জিত।’ ভারতে এ ধরনের উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজেশের মত মানুষদের আরো অনেক আত্মত্যাগ করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। তার এই পোস্টে ইতিমধ্যে ১০ হাজার লাইক পড়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার ইউজার এটি শেয়ার করেছে।
প্রসঙ্গগত, বিহারের মত কেরলার ওই নির্বাচনেও মোদির দল হেরে গেছে, বামপন্থি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট জয়লাভ করেছে।