বৈশ্বিক গম উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৬ কোটি টনে

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৩-১৯ ১৪:৪৭:৫৭


গত বছর দেশে দেশে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গম উৎপাদন ব্যাহত হয়েছিল। তবে চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষিপণ্যটির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ২০১৯ সাল শেষে বৈশ্বিক গম উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৭৬ কোটি টনে পৌঁছে যেতে পারে। এগ্রিকালচারাল মার্কেট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এএমআইএস) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও কমোডিটি অনলাইন।

রোমভিত্তিক এএমআইএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান ২০১৯ সাল শেষে বৈশ্বিক গম উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৭৫ কোটি ৭৪ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। এর আগে ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাপী রেকর্ড পরিমাণ গম উৎপাদন হয়েছিল। এ সময় বৈশ্বিক গম উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৭৫ কোটি ৯৪ লাখ টনে। সে হিসাবে, চলতি বছর শেষে কৃষিপণ্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন রেকর্ড সর্বোচ্চের তুলনায় ২০ লাখ টন কম হতে পারে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর সম্মিলিত অবস্থান  গম উৎপাদনকারীদের তালিকায় বিশ্বে প্রথম। চলতি বছর শেষে ইইউভুক্ত দেশগুলোয় সব মিলিয়ে ১৪ কোটি ৯০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে বলে জানিয়েছে এএমআইএস, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ইইউভুক্ত দেশগুলোয় কৃষিপণ্যটির সম্মিলিত উৎপাদন গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছিল। এ সময় ইইউভুক্ত দেশগুলোয় মোট ১৩ কোটি ৭৪ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল। আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে এলে আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি বছর ইইউভুক্ত দেশগুলোয় গমের বাম্পার ফলনের আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে ২০১৯ সাল শেষে যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলিয়ে ৫ কোটি ২০ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এএমআইএস, যা আগের বছরের তুলনায় সাত লাখ টন বেশি। ২০১৮ সালে দেশটিতে মোট ৫ কোটি ১৩ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল। একই চিত্র দেখা যেতে পারে কানাডাতেও। প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০১৯ সালে কানাডায় গম উৎপাদনের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়ে ৩ কোটি ২০ লাখ টন ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গম উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় রাশিয়া চতুর্থ অবস্থানে থাকলেও দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি গম রফতানি হয়। এএমআইএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল শেষে দেশটিতে প্রায় সাড়ে আট কোটি টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। অনুকূল আবহাওয়া ও বাড়তি আবাদের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর রাশিয়ায় কৃষিপণ্যটির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল শেষে অস্ট্রেলিয়ায় সব মিলিয়ে ২ কোটি ৪০ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে কৃষিপণ্যটির উৎপাদন বাড়তে পারে ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ। গত বছরের তীব্র খরা কেটে যাওয়ায় ২০১৯ সালে দেশটিতে গমের বাম্পার ফলন হবে।

অন্যদিকে চলতি বছর শেষে চীন ও ভারতে যথাক্রমে ১২ কোটি ৯০ লাখ ও ৯ কোটি ৯০ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছে এএমআইএস। আগের বছর চীনে ১২ কোটি ৮০ লাখ ও ভারতে ৯ কোটি ৯৭ লাখ টন গম উৎপাদন হয়েছিল। অন্যদিকে চলতি বছর শেষে আর্জেন্টিনায় ১ কোটি ৯০ লাখ টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি, যা আগের বছরের তুলনায় ৫ লাখ টন কম।

পাকিস্তানে চলতি বছর শেষে মোট ২ কোটি ৪৫ লাখ টন গম উৎপাদন হতে পারে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ লাখ টন কম। এ সময় তুরস্কে কৃষিপণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ১০ লাখ টন বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২ কোটি ১০ লাখ টনে। দেশে দেশে বাড়তি উৎপাদনের জের ধরে আগামী দিনগুলোয় আন্তর্জাতিক বাজারে গমের সরবরাহ বেড়ে যেতে পারে। ফলে কমতে পারে কৃষিপণ্যটির দাম।