বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় তুলা উৎপাদন খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর জের ধরে ২০১৮-১৯ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী তুলার সম্মিলিত উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় ৫২ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড) কমতে পারে। তবে চলতি মৌসুমে কমলেও পরবর্তী ২০১৯-২০ মৌসুমে তুলার বৈশ্বিক উৎপাদন এবারের মৌসুমের তুলনায় বাড়তে পারে ২ কোটি ১৫ লাখ বেল। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে। খবর এগ্রিমানি ও কমোডিটি অনলাইন।
ইউএসডিএর প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ১২ কোটি ৩৭ লাখ বেল তুলা উৎপাদন হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে পণ্যটির বৈশ্বিক উৎপাদন কমতে পারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। সে হিসাবে, ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষে তুলার সম্মিলিত বৈশ্বিক উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১১ কোটি ৮৫ লাখ বেলে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় ৫২ লাখ বেল কম। মূলত এবারের মৌসুমের শুরুর দিকে বড় একটি সময়জুড়ে দেশে দেশে খরা পরিস্থিতি বিরাজ করায় তুলার সম্মিলিত উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় কমে যেতে পারে।
এবার কমলেও ২০১৯-২০ মৌসুম নাগাদ তুলার বৈশ্বিক উৎপাদনে চাঙ্গাভাব ফিরে আসতে পারে। ইউএসডিএর সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০১৯-২০ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী সব মিলিয়ে ১৪ কোটি বেল তুলা উৎপাদনের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। সে হিসাবে, আবহাওয়া অনুকূল থাকার সম্ভাবনা থেকে এক বছরের ব্যবধানে তুলার বৈশ্বিক উৎপাদন বাড়তে পারে ২ কোটি ১৫ লাখ বেল। ২০১৯-২০ মৌসুমে বৈশ্বিক তুলা উৎপাদন নিয়ে এটাই ইউএসডিএর প্রথম প্রাক্কলন।
২০১৮-১৯ মৌসুমে শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে চীনে তুলার সম্মিলিত উৎপাদন অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে ইউএসডিএ। তবে ব্রাজিলে পণ্যটির উৎপাদন বাড়তে পারে। এর বিপরীতে ২০১৮-১৯ মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে তুলার সম্মিলিত উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় ১২ দশমিক ১ শতাংশ কমে আসতে পারে। মূলত মৌসুমের বড় একটি সময়জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদনকারী এলাকাগুলো তীব্র খরার কবলে পড়ায় দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন কমতির দিকে থাকবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একই কারণে ২০১৮-১৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও পাকিস্তানেও তুলা উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষে বিশ্বব্যাপী তুলার ব্যবহার এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা দেখছে ইউএসডিএ। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী মোট ১২ কোটি ২৬ লাখ বেল তুলার ব্যবহার হয়েছে। ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষে তুলার মোট বৈশ্বিক ব্যবহার আরো বেড়ে ১২ কোটি ৩৬ লাখ বেলে পৌঁছে যেতে পারে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। সে হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে তুলার বৈশ্বিক ব্যবহার বাড়তে পারে ১০ লাখ বেল। ২০০৭-০৮ মৌসুমের পর এটাই হবে তুলার বৈশ্বিক ব্যবহারের সর্বোচ্চ রেকর্ড। এ সময় ভারত, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে তুলা ব্যবহারে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকতে পারে। অন্যদিকে চীন, পাকিস্তান ও তুরস্কে পণ্যটির ব্যবহার কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।