এ বছর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু সবজি সজনে ডাটার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হওয়ায় এবার গত বছরের চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে। তরকারি হিসেবে সজনের জুড়ি নাই, তাইতো এর কদর রয়েছে সর্বত্র। সমগ্র দেশে সজনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় সজনে চাষিদের মুখে হাসি।
চাষীরা সজনে সবজি বিক্রয় করে আয়ও করছেন অনেক। সান্তাহারসহ আদমদীঘি উপজেলার শহর, গ্রামে-গঞ্জে সবখানে গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে সজনে ডাটা ধরেছে। দ্বিগুণ আমদানিও বেড়েছে বাজারে। স্থানীয় হাট-বাজারে সজনে ডাটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এসব মুখরোচক ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সজনে ডাটা স্থানীয়ভাবে বিক্রির পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিদিন উপজেলার যেকোনো হাট-বাজার থেকে শত শত মণ সজনে ডাটা আমদানি হচ্ছে। দাম গতবারের চেয়ে কিছুটা কম হলেও প্রতিমণ সজনে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে ১২ শ থেকে ১৩ শ টাকায়।
সান্তাহার পৌরসভার ইয়ার্ড কলোনিতে রাকিবুল হাসান সুজন তার ৩টি গাছ থেকে সজনে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। এ ছাড়া সাঁতাহার গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী সোহেল রানা ব্যবসার পাশাপাশি বাড়ির চারদিকে সজনে লাগিয়ে বিক্রি করে প্রায় ১৫/১৮ হাজার টাকা আয় করেছেন। অন্যান্য সবজির চেয়ে সজনে ডাটা পুষ্টিগুণ ও স্বাদে বেশি হওয়ায় যেকোনো বয়সের মানুষ সজনে খেতে ভালোবাসে। চিকিৎসাবিদদের মতে সজনে সবজিতে ক্যালসিয়াম, খনিজ লবণ, আয়রনসহ প্রোটিন ও শর্করা জাতীয় খাদ্য রয়েছে। এ ছাড়া ভিটামিন এ.বি. সি সমৃদ্ধ সজনে ডাটা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শরীরের পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে বলে সজনে ডাটা ওষধি সবজি হিসেবেও ব্যাপক সমাদৃত। এ ছাড়া সজনে গাছের ছাল এবং পাতা রক্তামাশয়, পেটের পীড়া ও উচ্চরক্তচাপ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
জানতে চাইলে আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, আদমদীঘি উপজেলার সর্বত্র সজনে চাষে উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া রয়েছে। এখানে বাণিজ্যিকভাবে সজনে চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যাথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ফলে এই উপজেলায় অনেকে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুর বাগানের মতো এখন সজনে ডাটার বাগান করতে শুরু করেছে। এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার কৃষাণীদের কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে।