কর্মসংস্থানবান্ধব উদ্যোগের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস. এম. আমজাদ হোসেন। বুধবার ব্যাংকের মতিঝিলস্থ প্রধান কার্যালয়ে সপ্তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোঃ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ নাওয়াজ ও মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. সৈয়দ হাফিজুর রহমান, স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার মতিউর রহমান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা জালাল উদ্দিন আহমেদ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিকুল ইসলাম চৌধুরী ও মোঃ মামুনুর রশিদ মোল্লা প্রমুখ।
চেয়ারম্যান এস. এম. আমজাদ হোসেন বলেন, দেশে বেকারত্বের হার বেড়েই চলেছে, কিন্তু নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। সে জন্য উৎপাদনশীল খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এসবিএসি ব্যাংক কাজ করছে। যাতে করে বেশি বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। আমরা দেখি, অনেকের হাতে টাকা নেই, কিন্তু কাজের আগ্রহ রয়েছে, তার দুটি হাত রয়েছে; তাকে একটু সাহায্য করলে সে দাঁড়িয়ে যাবে, তৈরি হবে নতুন কর্মক্ষেত্র। সুতরাং যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে আমাদের ব্যাংক সেবা সম্প্রসারণ ও অর্থায়নের ব্যবস্থা করছে। তিনি বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা না হলে উন্নয়ন টেকসই হবে না। আমরা শহর ও পল্লী অঞ্চলকে সমান গুরুত্ব দিয়ে ব্যাংক পরিচালনা করছি।
আমজাদ হোসেন বলেন, এসবিএসি ব্যাংক শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এই প্রত্যয় নিয়ে আমরা অতীতে ভালো করেছি। আশা করছি আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। আমাদের লক্ষ্য ব্যাংকিং সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছানো। তিনি এ লক্ষ্যে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাজ করার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে আগামীতে কৃষি ঋণের উপর জোর দেওয়া হবে বলেন জানান তিনি।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিষয়ে ব্যাংক ইতোমধ্যে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টকে ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ দিয়েছে। এটি আমারা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়েছি। পুঁজিবাজারে কোম্পানির তালিকাভুক্ত হতে দুটি পদ্ধতিতে রয়েছে। একটি বুকবিল্ডিং পদ্ধতি এবং ফিক্সড প্রাইজ পদ্ধতি। আমরা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে ফিক্সড প্রাইজ পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে আইপিও ছাড়বো। অর্থাৎ কোনো প্রিমিয়াম ছাড়াই আমাদের ১০ টাকার শেয়ার ১০ টাকা দিয়েই কিনতে পারবে।
এসবিএসি ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা ও আগামীর লক্ষ্য তুলে ধরেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোঃ গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, চারশ’ কোটি টাকার মূলধন নিয়ে শুরু করা ব্যাংকটির এখন সম্পদের পরিমান ৭ হাজার ৬৬ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের ৭৪টি শাখায় দুই লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে। ব্যাংকটিতে আমানতের পরিমাণ দাড়িয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা এবং ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ পাঁচ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২০১৮ সালে ব্যাংকটি সরকারকে ২০২ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েছে। গত বছর ব্যাংকটি ১২৪০ কোটি টাকা রফতানি বাণিজ্য করেছে। আন্তর্জাতিক পরিম-রে বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আমাদের সঙ্গে বিশ্বের ১৮৭টি ব্যাংকের সঙ্গে করেসপন্ডিং রয়েছে। ক্রেডিট লাইন রয়েছে ১৩টি ব্যাংকের সঙ্গে। গতবছরে আমরা দুই হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার আমদানি এবং এক হাজার ৬৪০ কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য সম্পন্ন করেছি। নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর মধ্যে আমরাই সর্বাধিক পরিমাণের রেমিট্যান্স আহরণ করছি।
তিনি বলেন, এসবিএসি ব্যাংক প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রমে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যকর খাবার পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমান খাবারের দোকানের চিন্ত করছি; যেখানে কম মূল্যে হাইজেনিক খাবার কিনতে পারবে সাধারণ মানুষ। আর যারা এটি বিক্রি করবে সেই উদ্যোক্তাকে ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থায়ন করা হবে। এছাড়া মিলেনিয়র স্কিমে পাঁচ লাখ টাকার বীমা সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, এসবিএসি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই শতাংশের নিচে। এছাড়া ব্যাংকটির কোনো প্রভিশন ঘাটতি নেই। রিপোর্টিং সফটওয়্যারের ত্রুটির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিবেদনে প্রভিশন ঘাটতি দেখানো হয়েছে। যা পরবর্তিতে সংশোধন করা হয়েছে।